ঈর্ষাগামী চোখ
এই চোখ ঈর্ষাগামী, অস্তাচলকাতর
. খঞ্জরের নিচে গলা পেতে দিতে হলো
দূরে কোথাও, খঞ্জনীর সুরে অবস মাতম
কাতর চোখে অস্তাচলের দৃশ্য বিলয়।
অস্তাচলগামী চোখ কতটুকু জানে?
তবু সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ প্রতিদিন
নতুন ভোরের স্মানে জন্মগ্রহণ করে
সূর্যাস্তের সঙ্গে লুকোতে চায় পাপ মুখ
দৃশ্যকামে জর্জর ফ্ল্যাটের অন্ধগৃহে—অন্ধকামে।
মিডিয়ার ফোকাস ততদূর প্রসারিত নয়
সে শুধু নিরক্ষরকে দেয় অন্ধ বাসনা
আর একটি পাগলা ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে
দিকচক্রবাল কাঁপিয়ে ছুটে যায় হ্রেষারবে
থাকে শুধু অলস জাবর, অবাধ সাঁতার।
ঈর্ষাগামী চোখ, তুমি কতনা আদরের
অস্তাচলের কালে সূর্যবল ডুবে যায় পুকুরে
কই? কোথাও ঢেউ ওঠেনি, পোড়া চোখ…
সৈনিকের ঘুম
আমি সেই মৃত সৈনিক
ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বাংকারে
সুদূর পরাহত স্বপ্নে কিংবা বিস্মরণে।
মূক ও নির্বাক চলচ্চিত্রের সেলাই বিহীন
. দৃশ্য পরম্পরা
রণ-দামামার পর বেজে ওঠে পাতার বাঁশি
বালক উচ্ছ্বল মুহূর্ত ফড়িংয়ের পিছু
. দৌড়াতে দৌড়াতে
একদিন সেই তরুণ ইউনির্ফের গোলকধাঁধায় পড়ে।
নগরের কোনো সংলাপ নেই তাঁর সেলাই ঠোঁটে
সে বয়ে বেড়ায় মৃত্যু ত্রাসের জলপাই রঙ
সরোবর স্নান নয়, খনন করে রক্ত সরোবর
গ্রীস্মের দুপুর তৃষ্ণার্ত নয়, হাহাকার করে
সেই হাহাকার ঘুমের, শীতল—স্নিগ্ধ সরোবরে কাতর।
মাথা
আমাদের বাজারে অনেক কিছু বিক্রি হয়
রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিলবোর্ডের কলাচর্চা
তাদের সমুদ্র ফেনিল হাসিতে
. প্লাবন ঝড় বয় গৃহস্থের হৃদয় ও ঘরে।
এও কোনো সমস্যা নয়
তরমুজ বিচির কালো দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে
পড়ুক মহল্লার দোকানে দোকানে
গরু ও খাসির মাথা কিনে নিয়ে যায় অনায়াসে।
নিষিদ্ধ গলির মুখে যেভাবে দাঁড়িয়ে থাকে
ফিসফিসিয়ে বলে মানুষের মাথা হলেও চলবে
তুড়ি বাজিয়ে বলে কোনো সমস্যা নেই
নগদ কিংবা ব্ল্যাংক-চেক সই করা আছে।
সেই থেকে আমি ক্রেতা খুঁজি
উপযুক্ত মূল্য পেলে
না হয় মাথা বিক্রি করে দিলাম।
ভালোই তো মাথা যদি না থাকে
মাথার যন্ত্রণাও থাকবে না—শুধু বিত্ত-বৈভব।