একফালি সখ্য
সে যাবে সমুদ্রস্নানে
একমুঠো রৌদ্রের সিথানে
আকাশের গায়ে গায়ে
ফুটে আছে রক্তজবা মেঘ
বালির বিছানায় গড়াগড়ি
দেহে যেন লবণের ফুলকুঁড়ি
সাদা তুলোর মতো ভেসে ওঠে
ভিন কোনো মহাদেশী চাক
বুঁদ হয়ে থাকা ভ্রমণসাঁতার
ঢেউয়ে ঢেউয়ে লুটোপুটি
সিক্ত আমেজ জলকেলি সুখ
ঘোর নীরবতায় বাতাসের হাসি
চোখে চোখ রেখে একফালি সখ্য
ভেদ করে যায় মহাভাদর সন্ধ্যা
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
গভীর গভীরতর অন্ধকার
খানাখন্দে আছাড়ি খাই
কী ভীষণ আনন্দ আমার
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
সে কবে কোন্ চক্ষুষ্মান
দেখেছে অপিচ আগামী
ধ্বংসের ঘূর্ণিস্রোত আমি
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
প্রাগৈতিহাসিক অভিলাষ
সে বেঁধেছে পাতাল-বাসা
জিঘাংসার আগুসে ঠাসা
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
আলোকের পথের আমি
সাক্ষাৎ যমদূত; নির্বিচার
মানুষের ঘোর ধ্বংসকামী
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
মিথ্যে পৃথিবীর যত সন্ধি
ও সৌরভ; তবু রাজর্ষি সে
থাকে না গৃহে স্মৃতিবন্দি
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
বিরাট বাটখারা রেখেছি
সব সাজিয়ে অন্ধকূপের
সরণিতে; নিখুঁত সর্বনাশী
আমি অন্ধত্ব ভালোবাসি
আমার আকাশে কৃষ্ণমেঘ
কখনো সে সূর্যালোক ভেদ
করে না, সুদ্ধ নিমগ্ন রাশি
বাউলের খিস্তি
অবশেষে গণমানুষের সঙ্গে মিশতে চাই
বেশ্যার দালাল থেকে ছিনতাইকারী আম
পথচারী খুনি ও চক্রবাজ ফড়িয়া মাফিয়া
সকলের সঙ্গে থেকে যে দুর্ধর্ষ কাবিল হার্মাদ
নিজেকে শানিয়ে তোলে তাকেও বুঝতে চাই
দুনিয়ার জঘন্য নেশাটি যার রক্তে নেচে ওঠে
সে আমার রহস্যের যমজ বোনের করোটিতে মেখে
নেয় অর্বুদ অনুভূতি তন্ত্রের মায়া নির্দয় নিপীড়ন
নিজের সঙ্গে খেলে অহর্নিশ মার্বেল গড়াই পাথুরে
শাসনে যখন একটি বাক্যও সে আর শুনতে পায় না
কে কত স্বামী কে কত নারী নব্য বসতির বাজারে
তার ফিরিস্তি টাঙিয়ে রাখে কোন্ কোতোয়াল?
কষ্টের সাঁতারে যে কাপ্তেন, তাকে বলো, আরও গরল কিছু
উৎকোচ হিসেবে আনা হোক প্রান্তজনের শাক্তদর্শনে
বাউলেরা জানে না পুঁতিময় শহরের লগ্নি-কারবার
দিন শেষে পথের মানুষটিই জন্মের সহায়
যাকে কখনো দেখেনি সেই হয় কুটুম্বাধিক আশ্রয়
রক্তের নজরানা চেয়ে যে সিংহী হিংস্র হয়েছিল
সে-ও একদিন ক্ষুধার অন্বেষে রাজপথ কাঁপিয়ে তোলে
এই ধূলিধূসর সংবরণ নতুল আলপথ সাজিয়ে নেয়
প্রতিটি মানুষের সনদে লেখা থাকে তার নিহিত পাতাল
নাগরিক সংহতি বর্ণবিভা ও কিছু মৈত্রী মিছিল
কাগজপুকুরের আয়নায় দেখা যায় সকলের প্রতিস্বর
নতুন সংবিধির মহাফেজখানায় জমে ওঠে রক্তশিরা
যে সময়টুকু নিঃশ্বাসের তাকে আরও সুগভীর করো সন্ধ্যায়