একখানা হাত
আকাশে জমেছে মেঘ; পথ নিরিবিলি;
সব চুপ। রাত দু-প্রহর।
বাড়িগুলি অন্ধকার পথের দু-ধারে;
ঘুমায় শহর।
শরীরে জমেছে ক্লান্তি, দুই চোখে ঘুম,
হেঁটে-হেঁটে একা ফিরি বাড়ি।
এখনই আসবে বৃষ্টি, তাই জোর ক’রে
চলি তাড়াতাড়ি।
হঠাৎ পথের বাড়ির
নিচের ঘরের জানালায়
দেখিলাম, ম্লান নীল ইলেকট্রিকের
আলো দেখা যায়।
শুধু এই জানালায় আলো জ্বলিতেছে,
অন্ধকার শহর নিরালা;
কাছে এসে চোখ তুলে যেই তাকালাম,
—বুজিলো জানালা।
নিলাম তাহারই ফাঁকে পলকের তরে
একখানা শাদা হাত দেখে—
দুইটি কবাট এসে বুজিল তখনই
দুই দিক থেকে।
একখানা শাদা হাত, কয়টি আঙুল,
আংটির হীরার ঝলক,
মণিবদ্ধে সরু এউলি, ম্লান-নীল আলো,
—চোখের পলক।
আবার দু-চোখ ভ’রে ঘুম জ’মে এলো,
সকল পৃথিবী অন্ধকার;
—এই কথা না-জেনেই মৃত্যু হবে মোর
হাতখানা কার।
এসেছি নিজের ঘরে, বৃষ্টিও এসেছে,
হাওয়ার চিৎকার যায় শোনা;
যার হাত, কাল তার মুখে দেখি যদি,
আমি চিনিবো না।
বিছানায় শুয়ে আছি, ঘুম হারায়েছে,
না জানি কখন কত রাত;
—কখনো সে হাত যদি ছুঁই, জানিবো না,
এ-ই সেই হাত।