উলঙ্গ তলোয়ার
কেউ কি কোথাও নেই?
কোথাও জেগে নেই একটি উলঙ্গ তলোয়ার!
সহস্র মায়ের যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে এসেছে এইসব ধর্ষক—
আর সাথে করে এনেছে একটা করে উলঙ্গ ধর্ষণফলা।
থেঁতলে চুষে মায়ের কলিজা খা।
আর মায়ের যোনিপথ হাজরে আসওয়াদ নয়,
প্লাবিত উদ্যান: বন্য শুয়োরের দল, ঢুকে যা।
ঢোক। যে পথে তামাম পৃথিবীর কুলাঙ্গার এসেছিস,
ঢুকে নে, সে পথে সহস্র লজ্জার থুতুসহ সকল নিরুপায় রাষ্ট্রকে।
একটা মা শিশুর অতিষ্ঠ রক্তপাতের কান্না,
একটা রাষ্ট্রযন্ত্র সমূলে উৎখাত করা
পার্ল হারবার আক্রমণ থেকে নগন্য নয়,
জেনে রাখো জিহাদি; জিহাদ হবে উলঙ্গ তলোয়ারে,
আবার একটা যুদ্ধ চাই—
রিকয়েললেস রাইফেল অথবা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র
লাগবে না
একটা উলঙ্গ তলোয়ারই যথেষ্ট।
মূকবধির কাকধার্মিক রাষ্ট্র;
রাষ্ট্র, তুমি কি কারো মা, কারও কন্যা অথবা কারও বোন!
আঁচলে আগলে রেখে ফনিমনসা অথবা ওপানসিয়া
কতদিন নিশ্চিন্তে তন্দ্রামগ্ন থাকা যায়—
কতটা মা শিশুর রক্ত চুষে চুষে খেতে চাও দ্য ভ্যাম্পায়ার রাষ্ট্র?
একটা উলঙ্গ, শুধু একটা উলঙ্গ তলোয়ার দিয়ে
এককোপে কেটে দাও একবার প্রকাশ্যে
একটা নরাধমের ধর্ষণপ্রবণ শিশ্ন
যা কোনো মায়ের সৃষ্টির ফসল নয়।
পিতা
কোথায় তুমি—
কোথায় সেই উল্লম্ব হাতের তর্জনি!
শেখ রাসেল আমি, আমার বুকে
সেই প্রস্ফুটিত রক্ত, মেখেছে রাজপথ,
রক্তজবা ভেবে ভুল করেনি তোমার উত্তরসূরি
গেড়েছে খুঁটি শাহবাগে, ফিরেছি আমি রাসেল
পিতা তোমার সাহসী ঝঙ্কারে।
দেখেছ পিতা, দেখেছ সেই দাঁতকেলানী?
আমার রক্ত কাকে হাসায়!
ইতিহাস হয়েছে যে দাঁতাল ইয়াহিয়া
সে যদি ফেরে তোমার উল্লম্ব তর্জনি তলে
তবে পিতা, কোথায় যাব আবার?
পিতা, জেগেছি আবার শাহবাগে
জেগেছে তোমার হুঙ্কার,
আমি বরকত, আমি জব্বার।
শিশু নয়, তোমার সাহসে বাড়ন্ত রাসেল
এসেছি তোমার রক্তের ফোঁটা চুয়ে চুয়ে
এই বাংলার রাজপথে, এই বাংলায়
আঠারো ছুঁয়ে সাহসের বজ্রকণ্ঠ।
আমি শেখ, আমি প্রতিটি শিশুর বুকে
শেখ, পিতা তোমার সাহসী শেখ
ফিরে পেতে আরও একবার অধিকার;
বেঁচে থাকার অধিকার; মাকে বলেছি,
ঘরে ফিরবো না আর, অপেক্ষা করো না
আমার জন্য।আমি দুর্বার নয় রুধিবার
জেগেছি আমি প্রলয়ঙ্করী সেই বজ্রকণ্ঠে
উল্লম্ব তর্জনি থেকে।—জেগেছি সেই
বাংলার লাল সূর্যের ফোঁটা ফোঁটা রক্ত থেকে…
আত্মহত্যা
ঘাসফুলের বেড়ে ওঠা মনে ঘাতকের পা।
আহা! কী উজ্জ্বলতা, লাবণ্যময়ী প্রাণ বুকে নিয়ে
জেগে উঠেছিলি ঘাসফুল আফ্রিদা, কবিতাকন্যা আলফা, স্কুলসখী ফাতেমা!
নামের সুবাস বাতাসে জ্বালা দেয়, ঘাসফুলের আত্মায় আত্মা মিশিয়ে
ফুরিয়ে যাই সুনীল সাগরে।
একদা আমিও ফুল ছিলাম—
ঘ্রাণ নিয়ে রঙিন পাপড়িগুলো দলিত করার আগেই আত্মহত্যা করেছে হৃদয়।
হৃদয় খুলে দিয়ে শূন্যে সুবাস বিলানো আত্মা লুট হলো,
কতটা জিঘাংসায় হত্যা হলো লাস্যময়ী ফুলের দল!
কুচিকুচি কেটেছে মনন, আপেল কাটার ছুরিতে নরাধম কুরক্ষী।
‘কাহার ওই ঘৃণিত নখর কলিজা ছিঁড়িতে তৎপর ঘাসবনে?’
নির্লিপ্ত প্রকৃতি ঘাসফুলের অশ্রুগান বাজিয়ে একটা ঝড় তুলুক তবে,
তুলুক একটা জলোচ্ছ্বাস।
একটা শুদ্ধ জীবনের খোঁজে কতবার আর আত্মার হত্যা করবো আমরা!
আর কয়টা সফেদ আত্মার বিনিময়ে একটা শুদ্ধ আত্মা মিলবে?
কতটা ঘাসফুলের হত্যার বিনিময়ে নির্মলে লীন হবে লোকালয়?