আর দেখা হবে না
সত্যি কি আমাদের আর দেখা হবে না?
দম বন্ধ হয়ে আসে। কল্যাণী সীমান্ত—
যখন সাদা আলোর ভেতর দিয়ে নেমে আসতে থাকে,
যখন রাত্রির শেষ ট্রেনের হুইসেল ঘুমিয়ে পড়ার ঘণ্টা বাজাতে থাকে,
যখন সুনসান নীরবতার ভেতর লেপ্টে যেতে থাকে তোমার ঘাম,
যখন মলিন হয়ে আসে বিক্রি না হওয়া ব্যবসায়ীর মুখ,
যখন হাওয়ায় উড়তে থাকে তোমার চুমু,
যখন বুকের ভেতর জমে থাকা অভিমান বিনিময় করতে থাকি,
কালীঘাটে হাভাতের মতো ভাতের থালায় মুখ রেখে
যখন তোমার আদুরে গামছায় আটকে যায় ঠোঁট,
মিউমিউ করে ঘুরে বেড়ায় অচেনা প্রাণ
তখন দম বন্ধ হয়ে আসতে থাকে।
সীমান্তকে কোনো কল্যাণের ফ্রেমেই বাঁধা যায় না।
অথচ আমরা হাতল ধরে ঝুলতে থাকা যাত্রীর মতো
আঁকড়ে রাখতে চাই পরস্পর, দম বন্ধ করে।
প্রেম
শুধু প্রেম, বৈচিত্র্যহীন বলে থেমে যেতেই
বদ্ধ ঘরের কোণে এক শিশু আনমনে ছিঁড়তে থাকে
কমলালেবুর খোসা। তার ঘ্রাণ উপচে পড়তে থাকে
মগজে, বাতাসে নানারূপে, বারবার।
পুরীর সমুদ্র দেখিনি
পুরীর সমুদ্র দেখিনি, দেখেছ তুমি—
সে নাকি সুন্দর, পোষ মানা, তার খাঁপখোলা
রূপ, জীবনজোয়ার, প্রান্তর, বেলাভূমি, নুড়ি—
ক্রয়ক্ষমতা থাকলে আর কাউকে দিতে না।
দিগন্তছায়া, পথের পাশের কচিপাতা, বারেবারে কার্পেটিং
হতে হতে লুপ্তপ্রায় আলপথ-সব নির্ভুলভাবে
বলে দিতে পারো। তাই যেকোনো সমুদ্রের কাছে
স্মৃতির ক্যানভাসে জড়িয়ে যায় পুরীর উপমা।
প্রত্নতাত্ত্বিক হারানো নগরের কাছে এলে
জীবন বদলানোর যে দমকা বেগুনী শিখা
বিচ্ছিন্ন করে রাখে মন
তাকে কোন পরিখায় আটকাবে?
বুকের মধ্যে বয়ে চলা যে সর্বশক্তিমান সমুদ্র
নির্ভুল গর্জনে, তপ্তবালুতে আছড়ে ফেলে ঢেউ
তাও ঠিক ঠিক গুনতে পারো অভিজ্ঞ আম্পায়ারের মতো।
আমি মুগ্ধ, দীর্ঘমায়ায় তোমার সমুদ্র মেলানো উপমায়।