অথবা মনে করো
অথবা মনে করো, এই কলোনির ভোরে
আমি একদিন তেরো শত নদীর তীরে
দিগন্ত ছুঁয়ে অপরূপা উষ্ণীয় রোদ্দুরে
তোমার মুখ খুঁজিতে খুঁজিতে শাদা
সজনেফুলের কুয়াশা-শাদা বকের পালে
বট বিস্তর ডালে ক্লান্ত মুসাফির হাওয়া
বসন্তমেঘ ভেসে যাওয়া নভোনীল সমুদ্র
সাঁতরাইয়া ভিড়বো-অদূর আলপথ-ঘর;
ঝুরঝুরে মৃত্তিকায়-উঠোনের বনবাসে
গৃহবধূর হলুদ ফুলের গালে-শস্যদানায়
চুমু খেতে দাঁড়াইয়া যাব-মজুরির ক্ষেত
ভুরভুর নদী সিথানের কাছে—তারপর
দাঁড়াইয়া যাবো ঘাসের ডগায়—আকাশ
থামিয়ে গহীন বনজোড়া আসমানি ছায়া
আমাকে রেখে যাবে অলিখিত বর্ণ মাইল—
আমাকে গেঁথে যাব ধুলোকণার মোড়কে
ভালবাসা সাঁটিয়ে গন্ধ গোলাপ—যতখানি
যাহার মুখ গলে পড়বে—অসমাপ্ত মিষ্ট ঘ্রাণ—
আমি তার প্রতিবেশী
এক ঝাঁক হেমন্ত বিকেল
ভিজাইয়া যায় গোলাপি কুয়াশা
হোগলা পাতা ঘর, অঘ্রাণ উঠোন
অনন্ত খোলা জরায়ু কন্যার পা
ডাগর হাওয়ায় সিঁথি কাটে…
ঝরাপাতা ডালে, পৃথিবীর কাছে—
এই বন পুরুষের আঙিনায়
জ্যোৎস্না মেলে ধরে, ঝুল আকাশ;
অন্ধকার অনুবাদে সপ্তর্ষি নামিয়ে
এক উজ্জীবিত উজ্জ্বল যুবক দাঁড়ায়—
চোখেমুখে এঁকেছে ডানা! এই সব…
ভাঙা কোলাহলের পাশে
আমি চোখের ভেতর কবর দেখি।
আমাদের কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
মৃত শরীর-বনের পাশে, মাটি খুঁড়ে—
এই সব শরীর চলে যাওয়া পথ
চালকুমড়োর শাদা কুড়োর মতো
ডুবে যায়-রাখাল সন্ধ্যার দিকে—
খলবলে ব্রক্ষ্মাণ্ড, আরও ভাগ হয়
সুগন্ধি আতরে মখমলি স্লেটদাগ—
আমাদের দেখা হয়—শুষ্কজলা ঠোঁটে
ভাঙা কোলাহলের পাশে-রেলস্টেশন,
ধু ধু মাঠ-পিঁপড়ের ঢিবি, আঁশশাদা
চারাগাছের বীজ, দেখা হয়—ফের
পিঠছোঁয়া রাজবায়ুর উঁচু ক্ষেতখামার…