রাত্রি
ধীরপায়ে নেমে আসে রাত্রি আষাঢ়ের
নুয়ে পড়ে সবটুকু আকাশ, তখন ঘুম ঘুম
চোখের তারায় অন্ধকারে বাসা বাঁধে
দিগন্তের জানা অজানা সকল মেঘ দলবেঁধে ওড়ে।
জানালা গলে বাতাসের ঝাঁপটার সঙ্গে
আলগোছে এইখানে নেমে আসে শূন্যতা, আসুক
এই রাঢ়ের সমস্ত জুঁইফুলের দিব্যি
এই ইলশেগুঁড়ি তবুও কী অদ্ভুত সুন্দর এখানে!
বাঁশপাতায় আছড়ে পড়া দ্বিপ্রহরের বাতাসে
শুয়ে থাকে দোয়েলের দল, ভাঁটফুলের ঝোপের পাশে,
বিজুলির আলো; ভেজা পথ,
পথের পাশের সবটুকু পাতাবাহারের সবুজ অপেক্ষা করে রয়
ঝুম ঝুম ঝুম শেষ প্রহরের সফেদ টগর বৃষ্টি দেখে
আমাদের হয়েছিলো পরিচয়;
টেলিফোনে, কে তখন কোথায় ছিলাম মনে রাখার হয়নি প্রয়োজন
শুধু মনে হয়, তখন হাসনাহেনা, তখন রাত্রির পালকে
কেমন একটা নিকষ কালো বিনাশের ঘ্রাণ লেগে ছিল!
দূরত্ব
আমাদের মনের কোনো দূরত্ব নেই
কিন্তু যে পথ তুমি অতিক্রম করে যাও
বাসে, ট্রেনে, রিকশায় এবং পায়ে হেঁটে
আমি তা অস্বীকার করতে পারি না
মানতে পারি না—
তাই বার বার তোমার দূরে থাকাটুকু
আমি গিলে ফেলতে চাই
তবু দ্যাখো—
আমার গলাতেই সেই দূরত্ব আটকে থাকে।
ঘুঙুর
টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার ঢং
পিছলে পড়ার কারণসহ পথ
শিউলিফোটা শীতজড়ানো ভোর
ভুলোমনের পানসি বাওয়া তোর।
বেনোজলের গড়িয়ে পড়া চোখ
শূন্য হাতে রাস্তা মাপার লোক
সচ্ছলতায় হাসফাসে যে মন
গুবলেটি ও অদ্ভুতুড়ে তোর।
কার্তিকের এ সন্ধ্যা নেমে যায়
ক্লান্ত হওয়া শান্ত মফস্বলে
ঘাসপাখিদের গলার স্বরে জাদু
হিজলবনে হাঁটতে থাকা তোর।
মেঘের ডানায় ভর করেছে রোদ
মোজার্টে তা লাগছে না একটুও
পাতায় পাতায় যাচ্ছে রটে, যাক
আমি কেবল রয়েই যাচ্ছি তোর।
আরও পড়ুন: ছবি থেকে কবিতা