আমার দ্বিধাকে চেনো
শুভ্রা, যেও না।
দেখ আমি বৃক্ষের গায়ে
উৎকীর্ণ হয়ে আছি
আমার দ্বিধাময় প্রেম তোমাকে উদ্দেশ করে
গীতি কবিতার ঢঙে সোনালি চুলে দোল খায়।
কত দূর যাবে তুমি, অপভ্রংশ এই শহর ছেড়ে?
প্রগতি বিমুখ মানুষেরা তোমাকে নেবে না।
তোমার রক্তজবায় নেমে আসবে নৈরাজ্য
দৃষ্টির মেধায় প্রেমহীন সংসার পাতবে দেখো;
তুমি কি বাঁচবে ওই চন্দ্রহীন আঁধারে?
দেখ আমি বৃক্ষের গায়ে সেপ্টে আছি
ওই সবুজ আলো ফেলে যেও না মন্দিরে
যতদূর যাবে ততই আঁধার নিকটবর্তী হবে
প্রগতি বিমুখ ওই বেদিমূলে
প্রতি রাতে সাপ ওঠে …
তোমার সোনালি চুলে আমার দ্বিধাকে চেনো—
দংশন
তুমি তো জানো না সর্পিনী—আমি জানি
তোমার ফণায় কতটা বিষ থাকে
কতটা বিষ ধরো তুমি গ্রন্থিতে;
কিন্তু আমার নিকটাত্মীয়রা কিছুতেই
বুঝতে চান না এ কথা—
আমি কী করে বোঝাই তোদের
আসলে ফণার ঢেউয়ে তুমি বিষ জমা রাখো
আমি কী করে বোঝাই ওই বিষে
আকণ্ঠ ডুবে আছি—রাত দিন
হৃৎপিণ্ড বরাবর চলে গেছে ছুরি
তুমি তো বোঝো না ফণা-তোলা রাগ
শুধু একটি রুদ্ধশ্বাস ছোবলের জন্য
পুনরায় পুরুষ হয়ে জন্ম নিয়েছি
হাঁটু মুড়ে বসে আছি নিলোষ্ণ নিঃশ্বাস
ওষ্ঠের স্বরলিপি বোঝ এবার, সর্পিনী হে
তোমার বিষাক্ত দংশন দাও আমার প্রমিত চুম্বনে!
ক্যাটওয়াক
মৃদু আনন্দ, ধীরে। আরও ধীরে
ক্যাটওয়াক নতুন বিন্যাসে—
এত সংবেদ কার কাছে জমা হবে
মেধার পোট্রেট গভীর নীল
সাদাকালো অসুখ
সাম্প্রতিক ভুল
সব, সবকিছু কেমন গোছালো
ছিমছাম; মনোরম অভিজ্ঞতায়
সহ-শয্যায়
প্রসন্ন মুখে তাকিয়ে আছ; তুমুল দ্বৈরথ ভুলে
খুলে নিয়ে ঘনিষ্ঠ বসন, সিঁথির উল্লাস
চৈত্রের হাহাকারে, রোদ-গোসলে গোপন;
যাবতীয় ঈর্ষা ভুলে সবুজ দালানের প্রকোষ্ঠে
তুমি স্থাপিত করো পাখিদের নৈর্ব্যক্তিক গান,
তেলাপোকার ওড়াওড়ির কমিক ইতিহাস …
যারা এসে ফিরে যাবে, তাদের জন্য রেখে দাও
মৃত ইঁদুরের শেষ দীর্ঘশ্বাস এবং ব্যাকুল প্রার্থনা
ছয়টি আঙুলের দক্ষিণ হাতছানি, বলে দাও,
যাবতীয় বস্তুরাশির সঠিক পরিমাপ, ভোগান্তিহীন
রাতে চিৎকার, শুধু চিৎকার…পুলক নিদ্রায়।
প্রেম
এখন অন্ধকার; মানুষের সব রঙ মুছে যাবে।
ঘনায়মান অন্ধাকারে জিয়ন কাঠির আভা নিভে যাবে।
অস্তমান গোধূলি শেষ হলে ফুলের সৌরভের মতো
কোন কোন প্রেমিকার মতো
অন্ধকার উঠবে ভরে মানুষীর ঘ্রানে—মানুষের ঘ্রাণে
এখন সমুদ্রে আঁধার—
প্রেয়সীর থৈ থৈ জলে জ্যোৎস্নার আকাঙ্ক্ষা
এখন রাত্রি—
ভীষণ রাত্রি রমনীর চুলের দৈর্ঘ্যের বিস্তীর্ণ ভাঁজে
এখন সময়—
মানুষ আর মানুষীর সন্তর্পণ আলিঙ্গনের অদ্বৈত একীভবন