আমরা বহুবচন
বিদায়ী আঙটি, লাল বেলুনের ঘর
তোমাকেও ফিরে যেতে হবে অপারগ,
ভোরের নামে শহরের যত শোর
এ ভীষণ সত্যিটা আমরাও জেনে গেছি।
বিমুখ দিন থেকে আজঅব্দি শবনীড়ে
আমি তাই বহুবচন,
দাঁড়িয়ে আছি বিমর্ষ সন্ধ্যায়;
শহরের সারি সারি ল্যাম্পপোস্টের ভিড়ে।
চা’র কাপে ঘুম
গোধূলির চায়ের কাপে যে মেয়েটি ঘুমিয়ে পড়েছে,
তাকে ভালো লেগেছিল।
উড়ন্ত বকের সারি পাপড়িতে ছায়া ফেলে
নরম করেছে আরও শরীরের ভাঁজ—
মাটির গন্ধ তাকে টেনে নিয়েছিল।
দূরের পাহাড়ে আছে বিকেলের কফিক্ষেত,
শস্যভারে নত যার অমিত বেদনা
নরমানো চোখের আলোয় ভালোবেসেছিল
সে তো সন্ধ্যার মেঘে চিঠি পায়নি আর খুঁজে।
দুপুরের রোদ পড়ে এলে ফের
পৌঁছে যাব ট্রামে করে বাড়ির পথ
পকেটে ক’পয়সা কম পেলে ’পর
চা’র বিল হাঁটাপথ মেপে দেবে কত—
সন্ধ্যার চিঠি যদি ডাকে না ফেরে—
চোখের পাতায় রেশ থেকে যায় আরও,
ভালো লাগা কাকে বলে হারিয়ে ফেলেছ
পুরনো কয়েন জমানো বাক্সের কোণে,
জেনে গেছ মেয়ে তুমি ততক্ষণে সেই—
চা’র কাপে ঘুমিয়েছি কতকালজুড়ে।
ঈর্ষা ও সাপ
বন্ধুত্বে ‘ঈর্ষা’
ফুলের গন্ধে সাপ আসার গল্প শোনায়।
তুমি ঈর্ষা করো প্লিজ!
অনেক রাতের স্বপ্নে সাপ আসে না
মনে পড়ে—
শৈশবের অঙ্ক খাতায়
ঘুমঘুম সন্ধ্যা নেমে এলে
বাবা, আস্তিক মুণি আর মনসা সাজাতেন।
টুক টুক টুক…
বালিশে রেখে ঘুম এসো,
ধীর পায়ে এসো,
শীতল মেঝেতে বুক ছুঁইয়ে
নত চিবুকে উচ্চারণ করো—
দোহাই আস্তিক মুণি
দোহাই মনসা
তোমার ভরসা।
বেষ্টনী ভেদ করে তোমায়
সর্পিল ঈর্ষায়
জড়িয়ে নিতে চাই।
আমায় ঈর্ষা করো প্লিজ—
ভয় নেই, বন্ধু হে—
মনসাকে আর ডাকব না।