শস্যশ্যামলা
চাঁদ যদি হতাশায় স্তব্ধ হয়েও রাতজাগা প্রহরী পূর্ণিমা হয়
তবে আমি কেন বেদনার দোকান খুলে সংসারী হবো না?
গৃহস্থের দরদিয়া মইয়ে সমান করবো না মনের বীজতলা
নতুন চরের বুকে প্রোথিত করে স্বপ্নবীজ
হৃদয়ে বৃষ্টির গোঙানি একটু সইবো না কেন?
মফস্বল-মন খুঁড়ে লোভের ইমারত গড়ে প্রকৃতিকে খুন করি
তাহাজ্জুদে বেগুনা না হয়ে হতাশার জোনাকি উড়াই
আমি শুধু লোকসানে হৃদয় বিলিয়ে বেদনার প্রাপ্তি খুঁজি
আবেগমাখা সেচে চাষোপযোগী করে তুলি তোর বুক
আর ধানের চারার মতো রুয়ে দিয়ে জনকের স্পর্শ
বর্ষার প্রকৃতির মতো তোকে শস্যশ্যামলা বাংলাদেশ গড়ি।
আবেগের বাসর
এ আমার প্রবাল হৃদয়; স্বচ্ছ নোনাপানির ভালোবাসা
যে বিরহের নুনে ভিজেভিজে বেদনাক্রান্ত
সে আর পাহাড়ি প্রেমে ঢালু পথে হাঁটতে চায় না
পর্বতারোহীর এক বুক বিরহের বোঝাসহ
ভালোবাসার চূড়ায় দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে চায় না আর।
জানো, সাগরকে যতই নিষ্ঠুর বলো না কেন?
গর্জন না থাকলে কেউ তাকে সমীহ করতো না
জোছনার হেঁয়ালি বা বিরহের চাবুকে করত জর্জরিত
যেমন চন্দ্রিমা বিরহের চাবুকে উসকে দেয় জোয়ার।
প্রেম নামের হতাশার মোহনায় নয়
এর চেয়ে ডোবা ভালো সাগরনদীর মোহনায়
যেখানে ডুবলে জীবন ছাড়া কোনো অপ্রাপ্তি থাকবে না।
অই আকাশের জোনাক পোকা রাতের তারাও জানে
তুমি শুধু পরকীয়ার পাথেয় হয়ে থাকো নষ্ট ভালোবাসায়।
তাই প্রেম আর বিরহ মিলে যদি রসমালাই ভালোবাসা হয়
তবে আমি বিরহ চিপড়ে আবেগের বাসর বানাতে চাই।
অপরাজিত আবেগ
নেশার পেয়ালা চুমু দিয়ে তৃপ্তি চায় বিরহের মন
মাতলামির মতো পৃথিবীতে কোনো স্বাধীনতা নেই
পরকীয়া ও মদে হারানোর কোনো বেদনাই নেই
তাই একের বদল অন্যকে খোঁজে রাতজাগা ক্ষণ।
যে জীবনে কোকিলা বা শুরা নেই, তার মতো মরুভূমি কে?
হাজার সাহারা জন্মানো জনক তো সে অতৃপ্ত হৃদয়
যাতে আবেগ দুঃখ চাষ করে জোয়াল বাঁধা গরু হয়ে
বিরহ কচি আমপাতার মতো ভালোবাসা চিবে খায়
রাজনীতি স্বপ্নখেকো বুদ্ধিজীবীর বুকে ঘুরে বেড়ায়।
কবির দয়িতারা তো পরিযায়ী হয়ে ওড়ে আর স্বপ্ন খায়
অথবা শীতে আশ্রয় খুঁজে খুঁজে হতাশার যোনিতে হারায়
অমাবস্যার ব্রা যাকে জোছনার দুধে ভাসতে না দেয়
মেঘের হেঁয়ালি যার পিঠে দৈবিক থাপড় মারে না
বিজলির মতো বুক চিড়ে হতাশার নামে না গোঙানি
কবি সে আবেগে বুদবুদ না ফোটা চালের অই ফুসফুসানি
যে নিয়তিকে হারাবে বলে স্রষ্টার নিকটে হারে না।