যা বলতে পারিনি, অন্য আমি
আমার সাহসিকতার গল্পগুলো একদিন শুনবে বলেছিলে
শহরের বুকে জেগে থাকা গাছপাতাদের মতো জেগে থেকে।
আমাকে ভয়মুক্ত করে আগলে রাখবে
তোমার ছায়ার শীতলতায় আমাকে শান্তি দেবে দুদণ্ড
আরও কত কিছুই
আরও কত কিছুই যে বলেছিলে অব্যক্ত বর্ণমালায়!
অথচ সাহস করে কিছুতেই বলতে পারিনি তোমায়!
লতা গুল্মের মতো কিভাবে নির্ভরযোগ্য কাঠামো খুঁজি এখনো।
বলতে পারিনি
কী বিশাল অন্ধকার আমার এই শরীর ও মনের ভেতর।
বলতে পারিনি
কিভাবে কোথাও পরাজিত হয়ে লুকাতে চাই মুখ।
বলতে পারিনি
কিভাবে যেন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছি দিনদিন।
বলতে পারিনি
কিভাবে কতো প্রিয় ডাক শুনিনি বহুদিন।
বলতে পারিনি
কিভাবে নিজেই নিজের শরীরে বিঁধেছি আলপিন
কিভাবে নিজেই নিজেকে ক্রুশে বিদ্ধ করে যিশু হয়ে গিয়েছি।
এসব কোনো কিছুই বলতে পারিনি তোমায়
যা শুনলে তুমি হয়তো বিচারক হয়ে শাস্তি শুনিয়ে দিতে কঠোর।
অচিন দেশের ঠিকানা
আজ চোখ বন্ধ করেই যেন আকাশ চাইলাম,
ছুঁলাম অরণ্য আকাশে প্রিয়তমের মুখ।
ঘরের অন্ধকারে তখন মেঘরাগ।
বেশ ভেজাভেজা, জলজ –
বুকের ওপর দুলতে থাকা পদ্মরাগমণিটির মতো।
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে হারিয়ে যাওয়া আলবেলা বাঁশির সুর।
অচিন দেশের ঠিকানা লেখা চিঠি।
পড়তে পড়তে কখন যেন হারিয়ে গেছি বিজন ঘরে।
আত্মহত্যাকারী যুবতী!
আমি কি প্রেমে আছি
অথবা নেই!
অথবা ঠিক এখানে
এক আত্মহত্যাকারী যুবতী!
আমাকে অর্জন করে চলে গেছে
নিয়তির মেঘ
আমি কি প্রেম!
অথবা প্রেমের
রুদ্ধশ্বাস তার দিকেই
টের পাই
সূর্যমুখীর তিন মিনিট পাজামা
উড়ছে
অথচ আমি দেখতে পাচ্ছি না!
ভয়
ইনিয়ে বিনিয়ের জল বয়ে যায়
পৈঠার ধ্বনি পাবো না জেনেও
সত্তার ফেনাগুলো চুরচুর
ভাঙা কাহনগুলো মুখে শরীরে
জিগীষার অপারগুলো
ভয় পাই, যদি পূর্ণ থেকে পূর্ণতায়
ভেসে যাই অন্যমাত্রায়
ভিক্ষাপাখির সরু ডালপালায়
তরঙ্গ ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো বাতাস
নেই যেন এমনকি খিদের কন্দর
বৃক্ষ রেখার দিগন্ত
ভয় পাই যদি ষোলোকলার পাশে
আমার সন্ন্যাসী জীবন অবাক রঙের
রুগ্ন হাত জাদুকরের
সুরায় সোহাগে যে রোদ অশীতিপর
তারই নাম যদি দিয়ে ফেলি ঈশ্বর!
কেউ তাকে গাছ বোলে আঁকে
কেউ বলে অপরূপ আরামের ভ্রমণ
কেউ ধীরগতি আরামের ভ্রমণ
ভয় পাই যদি
আমি শুধু তার প্রসাধনেরই
উপাসক থেকে যাই।