ডাকনাম
সবাইকে একসময় বেরিয়ে পড়তেই হয়
নিজেকে ধরে রাখা যায় না আসলে
পুড়তে পুড়তে নিজের আসল চেহারা
বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত!
ব্রাহ্মাণ্ডে সবার নিজেস্ব কক্ষপথ আছে
মেনে নিতে নাছোড় তা সামাজিক মানুষ
বিশাল এই নীলে আমি ক্ষুদ্র শক্তি,
যার বর্তমান নাম মানুষ।
ডাকনাম নারী
ক্ষণিকের পুতুল যেমন
তবু আমার দায় তো আমারই
পৃথিবী কি চুপ আছে?
তাকে ঘুরতেই হচ্ছে ভিখারির মতো
অশান্তিতে, সূর্যের পাশে|
এই যে ‘অনন্ত উৎস’
পৃথিবীকে টানে, আর
টানে ছায়াপথের সকল কীটকেই
সে নির্বোধ সমাজের
কথায় চলবে কেন?
অশিক্ষিত সমাজের তাড়না নেই
প্রবণতার ধাক্কা নেই,
দায় নেই, কর্তব্য নেই!
পৃথিবীর তো আছে
আমার তো আছে
তাই একসময় বেরিয়েই পড়তে হয়।
‘চেনা রাস্তা ঘর বাড়ি মায়ের মুখ’
‘সব’
সব পেছনে রেখে শুরু করতেই হয় যাত্রা,
গন্তব্যে,
নিজেস্ব গন্তব্যে
আগামীকালের স্মৃতি
এই তো সময় দিন গুনে গুনেই এগিয়ে যায়, আজকের কষ্ট তা আগামীকালের সুখের স্মৃতি। যা কিছু পুরনো তাই মধুময়। ঘড়ির কাটার সাথে আমিও চেষ্টা করি ছুটতে।
পারি না হাঁপিয়ে উঠি তবু, আমার ব্যর্থতা আর অসম্মানের দিনগুলোই মনে থাকে বেশি। আমার সফলতা যেন ঠিক আমার নয় সফলতার কথাগুলোকে তেমন করে মনে পড়ে না? তারাও তো আমারই অংশ| আসলে যা কিছু আপন সেখানে জিতে যাওয়া যায় না| আয়না জানে আমার কাহিনি| আয়না চেনে আমাকে সবার চেয়ে বেশি|
নিজেকে ঝাঁকাই| নিজেকে খুঁড়ে ঝরনা ফোটাতে চাই| সৃষ্টি আর সম্পূর্ণতার নেশা আমাকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যায়, যা কিছু আমার একান্ত আপন সম্পর্কিত সম্পর্ক| আমার ভেতরে ‘আমি’, আমাকে দিন-রাত বলে পৃথিবীর সাথে একাত্ম হতে, আমার অস্তিত্বের শক্তিকে অর্পণ করতে এই কুয়াশা ভেজা মাটির সাথে|
সেই অমোঘ ডাক, সেই ডাকে তো যেতেই চাই| তবু মন ব্যথা করে, আমি তো ওই ডাকের বিরুদ্ধে নোই তবু কিসের শাস্তি অনুভূত হয় দেহ মনে? মায়া? সাংসারিক মায়া ত্যাগের কষ্ট? এ তো লেখাই ছিলো কপালে, আমিও এই চাইতাম এবং চাই| পৃথিবী আমাকে গ্রহণ করো| এই অন্ধকারে এই কুয়াশা ভেজা মাটিতে| এই শূন্যতায়| এই মহাকালে| এই বৃহৎ প্রাকৃতিক কর্মকাণ্ডে| এই মহাজাগতিক প্রক্রিয়ায়|
আমার প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন হয়েছে| আমার জীবন শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে| আমি সামাজিক পোশাক ছেড়ে, কোলাহলরত মানুষ জীবনের পোশাক ছেড়ে| এই বৃহৎ অভিষেকে প্রস্তুত|
বন্ধু পলি
এক মিনিটের দূরও যে
বিদেশ বিভুঁই মনে হয় আজ
এ কাজ! বলো আর কার?
ফিরে এসো, পলকের ফাঁকে
আলোর ঝলকানি সব শহরজুড়ে
খালি মিথ্যে কথাই বলে,
তুমি নেই!
ভালোবাসা বড়ই ছোঁয়াচে
যে ব্যথা আদরে পুষি
ঠাকুর দেখি না-দেখব যে তোমাকে
ফিরে এসো খাবি-খাওয়া বুকে
হামিং বার্ড যেন-সহস্রবার কাঁপে।
আরও পড়ুন: মায়াজাল ও অন্যান্য ॥ তরিকুল ফাহিম