আকাশ
তোমার ভেতরে এক নিরিবিলি ব্যাপ্ত আকাশ
খুশি হয়ে আছে, দিব্যি৷ আমিও মোহিত ওই নীলে…
হিতাকাঙ্ক্ষী কত জন—উপরন্তু মেঘের মিছিলে
যোগ দিয়ে স্পর্শ করি অচেনা-অজানা অবকাশ৷
এখন কাশের মাস— চতুর্দিকে থই থই সাদা৷
সবুজ ঘাসের বুকে জমে আছে শিশিরের কণা…
তোমাকে নিয়েই যত হিজিবিজি মজাদার ধাঁধা,
কবিতায় এঁকে ফেলি রামধনু-রঙ-আলপনা৷
তুমি যে যোজন দূরে—খেয়াল করোনি এই সব৷
উৎসবে মেতে আছ, মুখে হাসি, ঝলমলে সাজ…
বিমল প্রভাতে জাগে পাখিদের মধু-কলরব
শারদীয় সুখাবেশে মেতে ওঠে আনাচ-কানাচ৷
তোমার ভিতরে, জানি—আছে এক অনন্য আকাশ,
যেখানে হারিয়ে আমি খুঁজে পাই প্রতিবিন্দু শ্বাস…
পাশাখা
পা ফেলে এগিয়ে যাবে৷ ছুঁতে চাও প্রত্যাশিত শাখা?
‘পাশাখা’কে মনে করো, ভ্রমণের প্রিয় তীর্থ স্থান৷
পাশা খেলে কাল নষ্ট৷ হেরে গেলে বড় অভিমান৷
এ ভুবনে ধ্রুব সত্য—একা একা যায় না তো থাকা৷
পাশাখা, বিশাখা, শিখা—সবেতেই তালব্যপুরাণ৷
আজ ভুলি, কাল চিনি, মনুষ্যস্বভাবে কত রং
কালচিনি বয়ে যায়৷ খরস্রোতে স্বপ্নের তোরণ
গড়ে আর ভাঙে নিত্য৷ উত্তরের হাওয়া অফুরান৷
সর্বাঙ্গে শিহর খেলে৷ দৃশ্য দেখে অভিভূত আমি!
গুঁড়ি মেরে বসে আছে, লাটাগুড়ি৷ ঘুড়ির আকাশ
বালকের চোখে যেন ডেকে আনে দুরন্ত উচ্ছ্বাস৷
দু’হাতে লাটাই, সুতো, অভিভূত, সহজ, গ্রামীণ৷
‘পাশাখা’ আমার সখা—কখনো সে হতে পারে সখি,
অনন্তসম্ভব মন স্পর্শে-স্পর্শে দিব্য চকমকি…
কবিতার টানে
মনে-মনে, এই যে তোমাকে লিখি, আচরণে তার
চরণ পড়ে না, ফলে অপ্রকাশ্য থেকে যায় সব৷
বুঝেও অবুঝ তুমি, যেন এক নিঝুম বেতার—
ইথারে মিলিয়ে দিয়ো না-দেখা বিজন উৎসব৷
সাধে কি অন্তরশিখা কারও যেন প্রতীক্ষায় স্থির—
নিবিষ্ট ধ্যানের মতো, একাসনে, অন্ধকারে, জ্বলে৷
কবিতা এমনই, ধুধু, ভুলে যাব খ্যাতি ও খাতির…
বিরহে সে অন্তরঙ্গ, সঙ্গসুখ, সন্তরণ, জলে৷
এই তো পেয়েছি তার স্পর্শটুকু, স্বপ্নাধিক ডানা৷
উড়ে উড়ে কত দূর, প্রেরণা সে অতলান্ত নীল…
শূন্যতার সাদাপাতা— বজ্রগর্ভ-মেঘ দেয় হানা
চকিত বিদ্যুতে জাগে শিখাময় প্রেমের নিখিল৷
আলোকিত মুখচ্ছবি— বিভোর হাওয়াটি শুধু জানে৷
বিরহকাতর মন ভেসে যায় কবিতার টানে৷