ডায়াগনোসিস আফটার অপারেশন
রাতদিন অতপর দূষণেই বাঁচা; মানবতা এইসব ধুলোমাখা বাণী—
শোনামাত্র দেহমনে বিবিধ এলার্জি! আর কোনো ওষুধ মেলে না।
ব্যর্থকাম একে একে ক্যাপসুল, ট্যাবলেট, নামিদামি যতসব তরলের
ডোজ; দুদকের মালিশেও সারে না বেমার! ফলে দেশ-দেশান্তরে
বুশের ইচ্ছার মতো রোগের বিস্তার; পৃথিবী সুসভ্য বলে এভাবে
চলে না! অতএব উচ্চমূল্য মেডিক্যাল বোর্ড; উচ্চকিত মতভেদ
তথাপি সিদ্ধান্ত—ছুরিকর্ম একমাত্র অবিকল্প পথ। শেষে মিত্রবাহিনীর
মতো কৃতকার্য ছুরিকাম; অথচ আশ্চর্য! আলসার টিউমার মূত্রাশয়ে
অশ্মরী কোনোটাই নয়! চেরাপেটে পাওয়া গেছে সারমেয় লেজ!
পরীক্ষায় দেখা গেছে শুরুতে চিকন ছিল—পশম যেমন; দিনে দিনে
কুণ্ডুলিত—ফাইনালে লাঙ্গুল-আকৃতি। আর কোণঠাসা সততার মতো
হৃদয়টা নেমে গেছে কিডনির দিকে; (আহা রে সততা! আহা কিডনি!)
সে-সুযোগে সাম্রাজ্যবাদীর মতো ড্রাইভিং সিটে বসে কুণ্ডুলিত লেজ!
অবুঝ স্বপ্নের সমীকরণ
স্বপ্ন দেখি—ছুরিগুলো স্যালুট করছে গরুগুলোর পায়ে
আর গরুমশায়েরা ডান পা উঁচিয়ে গ্রহণ করছে সালাম;
স্বপ্ন দেখি—নেকড়েরা রাখি বাঁধছে হরিণের গলায় আর
হরিণ-নেকড়ের নাচের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে বাঘ;
স্বপ্ন দেখি—সামরিক কারখানাগুলো উৎপাদন করছে
গোলাপগন্ধী পারফিউম আর কামানগুলো লিখছে কবিতা;
স্বপ্ন দেখি—পেন্টাগনে পড়ানো হচ্ছে প্রেমের বর্ণমালা
আর সৈন্যরা পরে আছে বেহুলা-লখিন্দর ইউনিফরম।
স্বপ্ন দেখি—বাংলাদেশের রাজনীতিকরা একতাবদ্ধ হয়েছেন
জাতীয় স্বার্থের এজেন্ডায় আর নদীগুলো ফিরে পাচ্ছে জল।
স্বপ্ন দেখি—দ্বিধার শহর থেকে ফিরে আসছ তুমি আর
তোমার জন্য কফির মগ নিয়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি দুয়ারে।
তুমি
তুমি তো সেই অদ্ভুতী চাঁদ
দুলিয়ে গেছ শীতশাসিত জল
যদিও আজ কৃষ্ণপক্ষ
জোছনা কুড়ায় মুগ্ধ বুকের তল।
গাড়িটা
প্রকৃতির পরাজয নিশ্চিত করতে
বেপরোয়া ছুটছে গাড়িটা
ড্রাইভিং সিটে বসে বদলি-ড্রাইভার—এক মাতাল;
কন্ডাক্টরের হাতে ছিপিখোলা বোতল।
দূর—সম্মুখে হা-খোলা ব্লাকহোল।
যাত্রীরা কেউ ঘুমে, কেউ মত্ত—
বাকিরা ফুঁ দিচ্ছে নিজ নিজ বুকে।
তাদের নেমে পড়ার কোনো জো নেই; গাড়িটা গেটলক।
পরাজিত প্রেমিকের দেশে
এই আমি, যার হাঁটুর নিচে দংশনের দাগ,
বাহুতে তীরের ক্ষত, নাকে বারুদের গন্ধ,
সে-ই প্রণয়ী উঠোন থেকে তাড়িয়েছি সাপ;
কিন্তু তারপরও কেন এত উত্তোলিত ফণা?
কেন আমি জানালা খুলে ঘুমুতে পারি না?
ভাতঘুমে ঝিমুলেই হিস্ হিস্ শব্দ ওঠে
সুজনী বিছানো সিথানে পৈথানে আমার!
সাক্ষী মহাকালের চৌকিদার—তিস্তা-করতোয়া-মহানন্দা,
সেই কবে কলার ভেলার সাথে ভেসে গেছে
পরাজিত সওদাগরের যুগ; তবু মাথার ওপর
থেকে আজও কেন সরে না কো মনসার ছায়া?
ও আমার ভালোবাসার গৌড়রাজকন্যা
আমি যে তোমার ঈষৎ ঝুঁকে থাকা মেঘস্তনে
পাহাড়ী নাক রেখে ঘুমুতে চাই একবার!
সেদিন আসবে কবে? কবে আসবে সেদিন?