এক.
ফুটবল খেলছি। ক্রমশ নিজেই গোলাকৃতি চামড়াশিল্পে ঋদ্ধ গতিপ্রাপ্ত বল। নিপুণ খেলোয়াড়; লাথি মেরে পাঠিয়ে দিচ্ছে আমাকে বিপরীত সীমান্তে; জালে আটকাবার মুহূর্তে ধরে ফেলছে ধূর্ত গোলকিপার। ক্রমশ পা বদল ও লাথি; অথচ ফাটছি না আমি, আক্রোশে অথবা তীব্র যন্ত্রণা ও আঘাতে।
ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল সীমানাজুড়ে ফুটবল খেলার মাঠে সিংহভাগ দর্শক; বাদ বাকি দুই দলে ভাগ হয়ে খেলছে; স্বাধীনতার পক্ষে ও বিপক্ষে।
ফুটপাতে থালা হাতে বসে আছে সারি সারি শিশু। পিঁপড়েরা ডিম মুখে ছুটছে উঁচু বৃক্ষ অথবা অট্টালিকার খোঁজে। সংসদ-সংবাদের সত্যমিথ্যা নিয়ে অফিস ফেরত দুজন তর্ক করছে।
দুই.
রোদ ও বৃষ্টি; একইভাবে গোপনে ডেকে ওঠা ঘুঘু ও প্রকাশ্যে অসহিষ্ণু বেড়াল; জঙ্গলে ঘুটে কুড়োনি; নিশাচর শেয়াল ও ডিমপাড়া শেষে অমোঘ অহঙ্কারে ক্রমাগত ডাকতে থাকা রাতা মুরগি; এইসব কিছুর হিসাব প্রতিদিন এনজিওগুলো পাঠিয়ে দিচ্ছে গ্লোবাল অর্থনীতির পাতায়।
স্বাস্থ্যকর্মীরা পাঠাচ্ছেন প্রতিদিন প্রতি ইউনিয়নে কতজন কয়টি কনডম অথবা জন্মনিরোধক ব্যবহার করলেন।
নিম্নআয়ের দেশ থেকে মধ্য-আয়ে, আর মধ্য-আয়ের দেশ থেকে উচ্চ-আয়ের দেশে পৌঁছুতে হলে নিরঙ্কুশ হিসাব ছাড়া গত্যন্তর দেখছে না কেউ।
তিন.
রমণী স্বভাবের কবিগণ রঙিন ফতুয়া গায়ে বসন্তের কবিতা পাঠ করছেন। কাম ও কামিনী, পাখি ও গোলাপ, এইসব কাব্যকথা কবিগণ পাঠ করছেন।
নারী-কাম-প্রকৃতিবিষয়ক আদি ও কোমল দৃশ্য আঁকছেন কবিগণ। কামুক স্বভাবেরপাঠক-পণ্ডিত-মিডিয়া নারী স্বভাবের এইসব কবির সোনার পানিতে ধুয়ে তোলা মেডেল ও টাকা দিচ্ছে।
অবশেষে এইসব আয়োজন, ‘কবি-সম্মাননা’নামে টাঙিয়ে রাখা হচ্ছে প্রকাশ্য সূর্যালোকে।
চার.
মাঘীপূর্ণিমার রাতে ট্রেন ছুটছে দিগন্তের দিকে। দিগন্তজোড়া মেঘপ্রসারিত পালকে আগলে রেখেছে আকাশ। প্রসারিত ডানার মেঘ কোরানমগ্ন ধ্যানে ভেসে আছে মেঘশূন্যতায়। মেঘের পাপড়িতে বসে আছে সাধু। গীতাপাঠ কণ্ঠে নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বাতাস।
রাজার পোশাক গায়ে গান গাইছে অন্ধফকির। বাংলাদেশ।