ভালোবেসে কী হবে?
ভালোবেসে আর কী হবে প্রেয়সী! ভালোবাসা কি নেভাতে পারবে শ্বেত-শয়তানের চুলো—যেখানে বারুদে ও ফুঁয়ে রাঁধা হয় রাতে তামাটে-সভ্যতাবিরোধী কার্পটবোমার ডিশ? কৃষ্ণের বাঁশি শুনে কি টমাহক গুটিয়ে নেবে তার আন্তঃমহাদেশীয় অগ্নিজিহ্বা যেভাবে জিলানির কথা শুনে ডাকাতেরা ফেলে দিয়েছিল তাদের পুরাতন লুণ্ঠনের মন? দ্যাখো—ইসরাইলি যুবতী তার উদোম স্তনে উল্কি এঁকে প্রেমিককে প্ররোচিত করছে, ‘যাও বীর, হত্যা করে এসো—ওিই ফিলিস্তিনি কিশোর-কিশোরীকে—যারা আরও ফিলিস্তিনি জন্ম দিতে দুদিন বাদেই বাসর রচবে আমাদের সম্প্রসারিত স্বপ্নের গাজায়! অতপর এই সুডৌল স্তন, এই জামবাটি নাভি, এই জবাকুসুম যোনী—এই সবই ভোগ করবে তুমি, যেভাবে আটলান্টিক হাঙর এসে ভোগ করে চাঁদনীরাতের ভূমধ্যসাগর!’ আর দ্যাখো—এক শ্বেতাঙ্গ যুবক স্বদেশি এক কৃষ্ণাঙ্গ প্রেমিককে খুন করে চুমু খাচ্ছে তার টপলেস প্রেমিকার ঠোঁটে—‘আই ডু রিয়ালি লাভ ইউ ডার্লিং!’
ভ্যালেন্টাইন ডে এলে রোমান্টিকতায় উদ্বেল হয়ে ওঠে প্রাণহীন সেলফোন ইনবক্স; কিন্তু কী হবে উদযাপন করে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস? ধরো, হত্যায় আসক্ত বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যদি কখনো কোনো নারীর সুবোধ প্রেমিক হয়েও যায়, তাতে করে কি হ্রাস পাবে ইসরাইলি গণতন্ত্রের রক্তমূল লিপ্সাকামিতা? আর যারা শান্তির বসন পরে আগুন দিচ্ছে জননীর স্তনে-মুখ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়া সোনামণিদের খাটে আর মুখে বলছে—‘জগতের সকল প্রাণী শান্তি লাভ করুক’—তাদের সেই গেরুয়া-উচ্চারণ এতটুকু শান্তি আনে কি অগ্নিদগ্ধ প্রাণে! অথচ সেখানেও যুবতী ভালোবাসে তার যুবককে; যুবক ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে তার অনুরক্ত যুবতীর উতলা কোমর!
এবং তুমি এও তো জানো—তোমাকে ভালোবেসে এসেছি দিনের পর দিন, মাসের পর মাস; এবং সেভাবেই বছরের পর বছর যেখানে—মনের মধ্যে ঘুড়ি উড়িয়েছে মন—শরীরের মধ্যে সাঁতার কেটেছে শরীর—যাকে বলে কমপ্লিট লাভ! অথচ আজও আমার একান্ত ভাবনায় রাজত্ব করছে শেয়াল ও কুমির, নেকড়ে ও বাঘ; আমি সেই প্রেমিক—যে প্রেয়সীর ঠোঁটে চুমু খেয়ে ব্রাশ ফায়ারে লুটিয়ে দিতে পারে কচিপ্রাণের বাগান; আমি সেই প্রেমিক, যে ভালোবাসার ইউনিফরম পরে শুধু টাকার জন্য করতে পারে কোল্ড-ব্লাডেড সেভেন মার্ডার—‘যা শালারা—ইঁটসহ ডুবে মর শীতলক্ষ্যার দূষণ-কালো জলে!’
অলোকায়নের ধোঁয়া লেগে নষ্ট হয়ে গেছে ভালোবাসার বাম চোখ; আর একচোখ নিয়ে একচোখা ভালোবাসা বাড়িয়ে চলেছে প্রেমের-নেকটাই-পরা-নেকড়েদের দাঁতাল সাফল্যের সাম্রাজ্য। তারপরও বলছ—‘ভালোবাসা’—‘ভালোবাসা’—‘ভালোবাসা’! বন্ধু, অমূল্যায়িত অভ্যাসে এভাবে আর কত স্তুতি রচনা রক্তমূল ভালোবাসার?
অনুরাগের জানালা
অনির্ধারিত ফাল্গুনে একবার তোমাকে ফোটাতে চাই
তাই বসন্তের বাতাস হয়ে মাঝে মাঝে নক করি দ্বারে
জানালার ফাঁক দিয়ে তুমি দেখো নিষিদ্ধ পরাগরেণু—
দক্ষিণ হাওয়ার ঠোঁটে—কিসের বাগান হব ভাই!
মৌমাছি মানেই যতসব পরকীয়া গান!
‘আমি তার ছলনায়- লারে-লা…’
উৎসাহিত আমি—মুগ্ধডানা মৌমাছি হই—
হাতের কাছেই নন্দনকানন—গন্দমফলের ঘ্রাণ
গন্দমগাছে ঝুলে থাকা নন্দনের নীড়
সে-নীড়ে গুঞ্জন জাগিয়ে—
ফালগুনের গান গাই,
উড়ে বেড়াই—অনুরক্ত জানালার আশেপাশে…
মৌমাছি থামলে—ভেতর থেকে ভেসে আসে গান
‘গুনগুনাগুন গান গাহিয়া নীল ভোমরা যায়…’
ও জানালা, দরোজার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কেমন?
ঝড়বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা
আমাদের জেতার জন্য যে রান দরকার,
বল বাকি নেই তার ধারে কাছেও;
এই কারচুপি শাসিত সময়ে—
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথা নাহয় চেপেই যাচ্ছি,
কিন্তু স্কোরবোর্ড ঢাকব কী করে যেখানে—
ডিজিটাল নম্বরে জ্বলজ্বল করছে—
তোমার পারফরমেন্স !
দ্যাখো—সুনীল গাভাস্কারের মতো সব বল
আগেই খরচ করে ফেলেছো!
আমার স্ট্রাইক রেইট যতই দুর্ধর্ষ হোক,
এ অবস্থায় আফ্রিদি-গেইলের ব্যাট নিয়েও
জেতাতে পারব না ম্যাচ।
মিস্টার আম্পায়ার, ইয়েস, আমিও জানি—
রোমান্টিক ম্যাচে ডাকওয়ার্থ মেথডের
প্রয়োগ নেই। আর আপনাকে
নিরপেক্ষতা হারাতে বলবই বা কেন!
তারচেয়ে, হে আকাশ, দ্রুত ঘোলা হয়ে ওঠো!
বৃষ্টি না দিতে পারো, অন্তত এক ঈশান ঝড়!
ম্যাচটা পরিত্যক্ত বলে ঘোষিত হউক !
প্রণয়ের সিরিজে আমার এক ইনিংসে
পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তিটা ভেস্তে যাবে, যাক!
এখন সিরিজটা ড্র হওয়ার সম্ভাবনাটুকুই
. দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ !