হৃৎকমলে মেখে আছে জ্যোৎস্নাখচিত রাত
এক.
কোনো কোনো পূর্ণিমা খুব আপন
কোনো কোনো পূর্ণিমা খুব প্রয়োজন
যখন ম্লান হয়ে যায় আলোর নগ্নতা, সন্ধ্যা নেমে আসে
দীর্ঘশ্বাসের উছিলায় তুমি কাছে আসো
হাওয়ায় কতটা উদাসী সুর
মাটিতে কতটা বেদনা মিশে আছে কানেকানে বলো
খুব বেশি দূরে নয়
তবু আড়ালে থাকে পূর্ণিমার অপরূপ আলো
মেকি নারীর নাভিতে গুচ্ছগুচ্ছ মাদকতা
মেকি পুরুষের মুখের ভাঁজে কপট অধীরতা
অথচ কিছুটা মানুষের মতোই তাদের অবয়ব
এদিকে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় তোমার নিঃশ্বাস
তখন পূর্ণিমাকে খুব আপন মনে হয়
মনে হয় খুব প্রয়োজন…
দুই.
এতটা বিচ্যুতির পরেও
তোমার কণ্ঠনালী পেঁচিয়ে আছে
পুরাতন সেই চতুর গণিকা
পলে পলে উষ্ণ শ্লথ
পলে পলে নগ্ন ভণিতা
তুমি দেখতে পাও না
তখনো হয়তো কোথাও
শাদা জ্যোৎস্নায় একটি বলাকা উড়ে যায়
ভল্গার মৌন বনাঞ্চলে বেড়ে ওঠে হিমেল দেবদারু
এখানে আর কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই
সমস্ত প্রবাহে থেমে গেছে সততার লাইলাক
এখন আমি শাটল ট্রেনে চেপে পাড়ি দিচ্ছি জ্যোৎস্না মাখানো এই রাত!
তিন.
জ্যোৎস্নাখচিত রাতে
একা একা হেঁটে যাই আলোর ভেতর
হাঁটছি হাঁটছি শুধু
শরীরে ধুলো মেখে আছে
মনের মধ্যে ধুলো জমে আছে
আত্মায় ছোপ ছোপ ধুলোর ছায়া
হেঁটে যাই পুরনো জলের কাছে
জল থেকে জলের গভীরে
অথচ কেমন ঠাই দাঁড়িয়ে আছি দীর্ঘ আগাছার টানে
ব্যাকুল জ্যোৎস্নায় যখন কামাতুর মহানগর
সান্ধ্যবাতাস আমাকে কিছুটা আশ্রয় দিয়েছে
জীবন, হে জীবন আমাকে আরেকটু জ্যোৎস্নার জলে ভেজাও…