হুইলচেয়ারে
হুইলচেয়ারে জীবন শুরু করেছিলাম, যদিও খুব কষ্ট হতো
দিনের আলো ফুটে উঠতেই হুইলচেয়ার বেরিয়ে পড়তো
শহরময় ঘুরে ঘুরে একটি নির্জন স্টেশনে এসে থামতো
চুপচাপ ট্রেনের চলে যাওয়া দেখতো
দেখতে দেখতে একদিন সে ভয়, হাসি, আতঙ্কের
সম্মিলিত সমাহারে আকাশ ফাটা চিৎকারে
চোখ ফেটে জল ঝরাতে ঝরাতে নিজেই
ট্রেনের পেছনে ছুটতে শুরু করলো
কিন্তু সকলে দেখছে, সে এখন উড়ছে
বন্ধুত্ব
মাঝে মাঝে তুই যাস আমার শহরে
আমিও আসি তোদের শহরে
দেখা হয় না। দেখা করি না পরস্পর
কখনো জানতে পাই তুই এসেছিলি
তুইও হয়তো তেমনি। দীর্ঘ হয় নির্জনতা
না-দেখা, পাথর চাপা পড়ে গেছে সব
আমরা কেউই ভাঙি না কারও অনুযোগ
অভিমান অথবা যুক্তিযুক্ত অভিযোগ
ভালো আছি, দুদেশের দুই শহরে। তবু
মনে পড়ে, ছুটে চলা পথের বাঁকে বহুবার
কত না হিসেবহীন উদ্ধারে দাঁড়িয়েছি, বলেছি
হাতটা শক্ত করে ধর, পরস্পর
সেইসব কথা, টেবিল চাপড়ে গান গাওয়া
সারারাত আড্ডা মারা, সকালের মধুচাষ
কফিতে লম্বা চুমুক
এখনো আছি
ঝিমঘর যান্ত্রিক বন্ধুত্বে, পরস্পরের ফেসবুকে
আহা প্রহেলিকা
মাঝে মাঝে পালকের নিচে
মাঝে মাঝে পাথুরে চাপে
অভিলাষ বাজি ধরে
জগতীয় পদাবলি দাঁড়িয়ে ভাবে—আহা প্রহেলিকা
সন্ধ্যার বাতিঘর
টগবগ ফুটছে সীমান্ত প্রহর
দেখো ফের দেখা হবে, পথের বাঁকে
সারিবদ্ধ ব্যারাকের কাঁটাতারে গেঁথে
আজও উড়ছে দূর হারানো রুমাল
এই যে স্বপ্নগুলো হা হা স্বরে
মাঝরাতে চমকে ফেরে ভোররাত ভেবে
এভাবেই জানিয়েছে ঘুমরাত ভুলে করে জেগেই থাকে
আহা প্রহেলিকা
মুখজুড়ে আঁক কাটে আগুনের শিখা