ফুলের কেরাত
হরিণের ছালে গুহার ম্যামথ…
কাঁপছে দূরের পুরান ময়ূর—
ফুলের ভিদায় নামছে গাড়ল…
অন্ধপাশার সান্ধ্য ঘুঙুর
বিমানবালায় কাঁপছে জড়ুল…
তামাম ছায়ায় তারার আলাপ—
পতঞ্জলির ভানের বাথান…
নাট্য ভাষায় সুরের মেকাপ
নরেশ-কণ্ঠে ফুলের কেরাত
অর্ধচাঁদের মীনাক্ষী-মথ…
দেদার সাপের তুমুল শ্বাসে
নামছে তখন বেজির শপথ…
কোথায় তামার শিলার তুলট
সারস-বনের কণ্ঠ-সীমার?
কোথায় কোড়ল পাখির হৃদয়
কাঁপছে সেতার ধূসর সামার?
আমার পিতার কফিন-ছায়ায়
ফোটে কি সতত বিভার মুকুর?
সুগোল আয়ুর মুখের রেখায়
পুরান ধুলার জিরাফ-ঘুঙুর…?
স্যাডিজম ঘিরে এই সৌরারশ
পেতেছে রেণুর মেধাসারবান—
কাঁপছে চুরটে দুঃখের ধোঁয়া…
তবে কি মৃতের চোখেতে আজান?
বাতাসে তারায় কার পত্র ওড়ে,
ধূলিতে ধূসর মীনের শিশির…
ছুঁয়েছে আত্মা টেররিস্টের
আন্দামানের সেলে কার শির?
জানে কি পাখিরা পাসপোর্ট কী—
কী-বা মালিকানা, দানের বাক্স?
বাগানের পাশে সেলুলার বন,
ফলের ছায়ায় কাদের ভাষ্য…?
আত্মায় ওড়ে পৃথিবীর হাওয়া…
ফাঁসির গন্ধে সে আবু গারিব,
বনের নিশ্বাস হাঁপাচ্ছে দ্বীপে
জল্লাদে কাঁপে থির মাগরিব…
ফেনায় ফুটেছে মিনার-সৌরভ
ফলের নষ্টে কূট-রাজরাত…
পুরান চিঠির হাওয়া আসে না,
আসে না সতত বিবির প্রভাত…
আত্মায় ওড়ে পিরিতির রিপু,
হৃদয়ে জমছে মবিলের পোড়া—
তূণে বসে ফোটে আঁধারের শির…
কস্তুরিফল ছিঁড়ছে মীনেরা
সুইসাইডাল
আতাবনে ফাঁসি আনে প্যারাগুয়ে লন,
কাঁটামালি বিঁধে ফোটে ভূ-মেসোমণ্ডল…
রেহেল ক্রুশের দাগে জ্বরের আঁধার,
মেথির সৌরভ পিষে খতিব গাড়ল
আয়ুর চোষক এক অন্ধ ভ্যাম্পায়ার!
গান্ধর্ববিদ্যায়ও ফোটে রোজ সুইসাইডাল…
তহুরা জান্নাতি ফল খোলে নিম্নপাড়,
স্বঘড়ির কাঁটাজুড়ে সৌর গামাশার্শি…
ঝরে যায় মেধাবিষ শ্লীলের ওপার,
ফুলের একতা আনে খুশবুর সংসার…
শিরের চাতালে ঝরে কূট হ্যান্ডনোট…
আমার সোনার বাংলা ঘ্রাণের কাঙাল,
অডিটে ফাসেক নামে ঝরে তারাফেনা…
পথের অ্যারোমা শোঁকে শিকারি চণ্ডাল,
নিমের পাতায় দেখি নার্সের মোহনা…
ঘি-ভরা দিনের মনে মায়ের সেতারা…
উজানিশিসের পথে মানুষের ঘ্রাণ,
রাষ্ট্রের ফ্যাব্রিক জুড়ে তামাদের ভক্ত…
গানের আসরে জমে উৎকীর্ণের প্রাণ—
আদম রাতের আত্মা—নুড়ি সাপ রক্ত…
ক্লিশে বিয়েভরা নথ কীটে দষ্ট খেত
পাশায় জীবন ঘোরে কাটে কালাকাল,
জারজের ফুঁয়ে ভাসে রিউমার সন্ধ্যা…
সুলতানার পাখসাটায় প্রেমের মড়াল—
আসমুদ্রে ভেসে যায় তামাদষ্ট বন্ধ্যা…
হাসির ফাঁকেও দাঁত থাকে
আমার আকাশে দেখি দাঁতের সাপের বুনো স্তূপ,
প্রতিবেশী মহক্কল দুধের শরীরে খামচি কাটে!
তবু কবি আনে প্রাণ নিরস মাঠের নুড়িঠোঁটে
মীননাথের জন্মভিটা—কবিতার ঝম ঝম কূপ…
উর্বর মাটির বুকে জমে আছে তবে মন্ত্রগুপ্তি—
খাঁটি মধু জমে জমে ভরে ওঠে রসাল বুরুজ…
অপেক্ষায় অন্ধকারে কখনোবা মাছ—মরা কাক,
বানদুয়ার ঠেলে ঢোকে রাতের কুসুমে ভণ্ড নটী…
নরম কাদায় জমে কিষানির প্রেম যেন মাতৃদুধ—
অথচ আসনে ধূপ লালসালু, মোমের নারী নাচে…
ভোরের মক্তবে রেখে শৈশবের জবালাল স্মৃতি—
মুক্ত মন স্বপ্নমৌলি বেচেছি কারির ভুল পাঠে!