অবিবাহিত চুমু
ভেবেছিলাম—কোনো প্রেমিকা-ই বউ হোক আমার
কিন্তু তাদের সুহৃদ সিন্দুকের দোরে ঝুলানো অনাস্থার তালা
প্রেমের মসৃণ আঁচলে তোলা ঈর্ষার ফুল
তারা একেকজন পরশ্রীকাতরতার সুঁই
সবার মাঝে প্রবাহিত ঝড় এবং সর্বজনীন বিচ্ছেদের সুর
অথচ যাকে গ্রহণ করলাম—ভাদ্রের জোছনা চুবানো রাতে
উপসনার প্রথম রাতেই সে দাবি করলো—ভালোবাসার ফুল
দু’মুখের গড়াগড়িতে শেষ হলো—আমাদের আদরের মেকাপ
তার ঘনিষ্ঠ চিবুকের পাড়ে ঢুলে পড়লো শাহাদাৎ আঙুল
বলি তারে—আমি যে খয়েরি রঙের মৌমাছি এক
করি শুধু চিরদিন ফুলেরও কারবার
তবু সোনামুখী মেয়ে, আমার নেই কোনো ফুল।
প্রথম রাতে তোমাকে উপহার দিতে পারি পুরনো মধুর শিশি!
হাবিলের ভাই
এক.
আমি কি হাবিলের ভাই?
কাবিলের জীবন নিয়ে জন্মেছি?
আমার পিতার নাম আদম বলেই
একটা খুনির কেলেঙ্কারি মাথায় কেন তুলে নিতে হবে?
কেন আমি পাথর বিছানো রাস্তায় ঘুরে বেড়াই?
স্বপ্নের শেকলে কেন বাঁধা হলো আমাকে?
এটাই কি আধুনিক মানুষের নিয়তি?
এর চেয়ে ভালো কি নয় পতঙ্গের জীবন?
আর নিজেই উড়াল দিতাম
মেকি আলোর ফোয়ারায়!
আমার বাবার পোড়োজমিগুলো ঝিমোয়
বর্ষণের অভাবে কি হাহাকার
দেশি বীজগুলো সম্ভাবনার দ্বারে দ্বারে পুড়ছে
বন্যায় ভেসে গেলো সব ক্ষেত
এখন বড়ই বানানো অভাব!
দুই
পিতা চাষ করছেন আমার ভবিষ্যতের পোড়াজমি
বর্ষণের অভাবে সম্ভাবনার বীজগুলো হবে বিনষ্ট।
মৃত্যুর লোভীয় গ্রীবা
উটের পাহার হয়ে আমার ওপর চেপে বসেছে জীবন
মরুভূমিতে আমার অভিজ্ঞতা শূন্যপ্রায়
কচ্ছপের পিঠের ওপর সূর্য বয়ে বেড়াচ্ছে পৃথিবী
জীবন কখনো হামলে পড়ছে সাগরের তিমির মতো
কিন্তু আমি সাগর দর্শনে বেরুতে পারছি না
জীবন কি কখনো অজগর হয়ে বেড়ায়?
প্রচুর বিষের ভারে নত হয়ে পড়ে?
কিন্তু দংশনে জর্জরিত যাপন
পাহাড়ে উঠার ট্রেনিংয়ে গিয়ে জীবন সাগরে আছড়ে পড়ে
সামনে অট্টহাসিতে মরণ
কেন তবু ভালোবাসি হে জীবন?
মৃত্যু কি জীবনের অমিয় সিঁড়ি?