হরিণাঞ্চল
দিনের শেষে লাল শাড়িতে সূর্য ঢাকল নদী
ধানের ছড়ার হার হাজং মেয়ের বুক অবধি
নাচছে ওই ফড়িংপল্লী সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া
এক ভাষাতে হবে জীবন সত্যি করে পাওয়া?
এক হাওয়া বাহির থেকে ভেতরজুড়ে রবে
দুই শালিকে বুকের কাছে নীরব কথা হবে!
বন্যহাতি যেখান দিয়ে চলে, সোনালু ফুল
ঝরতে গিয়ে জড়ায় কালো ঘন মেঘের চুল
সেই পথটা সেই মেঘটা আমার বলে চিনি
কবিতা থাক এমন করে জন্ম থেকে ঋণী।
মাটির মেয়ে তোমার মাটি করেছি কবুল
সেই মাটিতে বুনব নাকো এমন কোনো ভুল
কূল-গোষ্ঠী যাবে মুছে বেনো জলে ভেসে
সময়স্রোতে থাকবে তুমি চাঁদের মতো হেসে।
আমার গায়ে ভর করেছে শর্ষেফুলের জ্বর
শিয়রেতে দাও ছড়িয়ে জলেরই আদর!
প্রণয় ঝড়ে এক হবে আজ পাহাড়-সমতল
রক্ত শুধু কইবে কথা—হৃদয় হরিণাঞ্চল!
সিঁদটা মায়াবী হাতের কাটা
বুকের ভেতর পড়েছে ঢুকে বৃষ্টি
বুকের সিঁদটা মায়াবী হাতের কাটা
আমার এখন কদম ফুলে দৃষ্টি
বনের ডাকে একলাটি ওই হাঁটা!
জোছনা পেলো জোনাকি এক জীবন
জলের ভেতর কেমন করা বাকি?
আর জোছনায় কোমরবিছার ওজন
শরীর জুড়ে জোছনারই আঁকাআঁকি!
ঘরের ভেতর ঘর ছিল না জানি
মেঝে গেছে নদীর ঘাসেই ভরে
হৃদয়ের গুন বছর ধরেই টানি
কবিতায় মানুষ যেমন করে মরে!
দিন চেয়েছিল জরুরি মেঘের সাড়া
চোখের দেখায় অধিক শিহরণে?
ফুল ফোটাতে ব্যস্ত গাছের পাড়া
জীবন গেল গন্ধ আহরণে!
আহা ছোট পাখি
তোমার পথটা হাওয়ার
তোমার নামটা গাওয়ার?
কদিন ছিলে ভ্রূণ?
ছোট পাখি, টুনটুন!
সাঁতার থাকুক সাঁতার
গল্প মেহেদী পাতার
রঙের নবীনা পাতা
কাঁটামর্মে সেও গাঁথা
ঝরবে যে মেঘ ঝরুক
উড়বে যে পাখি উড়ুক
কয়টি গাছ আড়াল
তোমার তবে উড়াল?
রক্তডোবা অক্ষর
পাশেই পড়ার ঘর
কেউ পড়েনি তাকে
যে রক্তে ছবি আঁকে!
তোমার ঘুমটা চোখের?
চোখ কি তবু চোখের?
তোমার হাসি ঠোঁটের
ঠোঁট কি তবু ঠোঁটের?
তোমার পথটা হাওয়ার
তোমার নামটা গাওয়ার?
কদিন ছিলে ভ্রূণ
ছোট পাখি, টুনটুন!