স্বপ্নচারু
আমিই তোমার পড়ার ভাষা
বুকের বাড়ি; স্বপ্নচারু চেনো?
জানোই যদি, পানকাতুরে
ছল দেখিয়ে দুঃখ কেনো কিনো?
রোদ জমিতে উথলে ওঠে
নোনা আবেগ অক্ষমতার স্বাদে,
নিঃশ্বাসের ওই কোটর কাঁপে
ভাসান মেঘে তোমার বজ্রনাদে!
কিছু শব্দ দরজা খুলে
ছিঁড়তে থাকে বিষম বিহ্বল,
শ্বাস ধনুকের ওঠা-নামায়
বুকের ভেতর তোমার কোলাহল!
তোমার বাড়ি, বুকটা কোথায়?
জানতে যদি জমাটবাঁধা স্বরে
বিন্দু বিন্দু সাধ এঁকেছে
স্বপ্নচারু, তোমার মনের ঘরে।
ছায়ামূর্তি
রোখসানা ইয়াসমিন মণি
যে চোখ আমাকে ডাকে
কতকাল ধরে ডাকে,
যে ডাক শুনে পৃথিবীর
নাভী ছিঁড়ে পালিয়েছে
কুয়াশা,
সে ডাক বসন্তবাহক
ঘোলাটে দৈনিকের পাত
কেটে পাতালে সেঁধিয়েছে
যে মৃত্তিকার আজন্ম
তিয়াসা,
সেখানে নাচে দিনফেরত
মাতাল মানুষের স্বপ্ন;
চাঁদজ্বলা কবিতার মাস্তুলে
সোনারঙা জীবনের পরিপুষ্ট
বাচালতা,
সেখানে রৌদ্র শাসন করে
চামড়ার লোভাতুর শিহরণ,
বিষের পল্লবে ভেসে থাকা
লীলার ব্যাধি, অসুস্থ আত্মার
আকুলতা।
সে চোখ আমাকে ফোটায়
বুকে বাড়ে শেকড়ের মতো,
আমি মাটির মতো হয়ে গেলে
সে তখন ঝড় হুলস্থূল নদী;
সে মগ্নলোকের বরফ ভেঙে
ছুটে আসা কাব্যের জলধি।
অচিকৎস্য অসুখ
একটি মৃত্যুর হাত শশ্মানে যেতেই
প্রকৃতি কাবাবের মতো দগ্ধ হচ্ছিল,
লাল ভেজা মুখ তার জল ফেলে
উড়ে যায় সন্ধ্যার অন্তর্বাস খুলে
কুয়াশার চোখে;
স্বপ্নখোর আশ্বস্তরা ধর্ষণ করে
চলে যায় নগরবাড়ির স্টেশন।
চারিদিকে ঝাঁকঝাঁক আঁধারের জ্যামে
নীল শাড়ি পরে, উদ্বাস্তু আঙুল
জুয়াড়ি রাতের ভেতর নিজেকে খোঁজে।
বিবস্ত্র না কি, বস্ত্র পরে থাকে মহাকাল?
বিবস্ত্র হলেই ব্যথা মানতে রাজি আছি;
বস্ত্র পরিহিতা হলে কিছু রাখঢাক রাখা চাই।
তবুও, ব্যথারা সবখানেই যায়;
বাগান ভাঙে, দিগ্বিজয়ী জীবনের
পাঁক খুলে কুৎসিত মরণের
পূজারী হয়ে আহার করে বিভৎস হাহাকার,
এসব উলঙ্গ ব্যথাদের নেই অনুশোচনা
ওরা নৃশংস হয়ে খুলে ফেলে মহাকালের সালোয়ার।