তোমার নামে ভালবাসার বীজ বুনে দিলাম
কেন যেন মনে হলো
পৃথিবীর সব গতি থেমে আছে বহুকাল
বঙ্গোপসাগর থামিয়ে দিয়েছে তার বয়ে চলা
স্থির হয়ে আছে সব ঝর্ণাধারা
পাখিরা হারিয়ে ফেলেছে চিরন্তন সুর
পৃথিবীর কোনো বাগানেই ফুটছে না ফুল
ছড়াচ্ছে না তার মোহনীয় ঘ্রাণ!
ওদের প্রশ্ন করলাম, কেন?
‘এক নতুন প্রাণের আগমন প্রতীক্ষায়’, বলল ওরা।
সেদিন সময় একই স্থানে স্থির হয়ে রইলো
সূর্য তার আলো দিতে ভুলে গেলো, যেন এখানে কেবলই রাত!
চাঁদ ছড়ালো না জোছনা, যেন প্রতিটি রাতই অমাবস্যা!
তারারা জাগলো না, নাবিক হারালো দিক্।
জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
বললো ওরা, ‘পৃথিবীতে আসছেন এক নতুন মনীষা!’
তখনো এলে না তুমি।
তুমি আসোনি বলে পৃথিবীতে কোনো নতুন উদ্ভিদ জন্মালো না।
জমিন তার হারালো উর্বরতা।
আসমান হারালো নীলিম মোহনীয়তা।
পৃথিবীতে থাকলো না কোনো প্রেমিক পুরুষ।
নির্বাসিত হলো প্রেম।
তবু তুমি এলে না।
তারপর
আমিই প্রথম তোমার নামে ভালোবাসার বীজ বুনে দিলাম।
পৃথিবীর সব প্রাণী ও বস্তুনিচয়ের কানে কানে একথা জানিয়ে দিল হালতি পাখি!
অবশেষে ১৪ অক্টোবর জন্ম নিলে তুমি।
এরপর পৃথিবীর সব কিছু সচল হলো।
এ যেন তোমার জন্মের সচল আয়োজন!
স্থায়ী প্রেম, সুবর্ণ সকাল
স্পেনিশ নারীর মতো ক্ষণিক প্রেমের পাখি তুমি
ও মনে যখন যাকে ভালো লাগে প্রেম দাও তাকে
আবার ফিরিয়ে নাও সেই প্রেম অন্য কারো ডাকে
মালকোয়া তুমি কি তবে, ক্ষণস্থায়ী মেঘের মৌসুমী?
কখনো বদলাও রূপ, যেমন বদলায় দিন-রাত
নিজেকে বাঁচিয়ে চল টেরর বার্ডসের থাবা থেকে
নিজেকে রাখো কি দূরে দুরন্ত শকুন, চিল থেকে?
কখনো শত্রুর সঙ্গে সহজে মিলাও দু’টি হাত!
ব্রিটিশ-মার্কিন থেকে শেখোনি যুদ্ধের ছলাকলা
অজস্র আতঙ্কে তবু বিক্ষুব্ধ বিবেক নিয়ে চলা
সাথীহারা যেন কোনো রহস্যলোকের বাইনমাছ
বিলুপ্ত বসন্ত পাখি, খুঁজে ফেরো কৃষ্ণচুড়া গাছ;
এখন পৃথিবীময় গাণিতিক গ্রহণের কাল
তবে কে ফিরিয়ে দেবে স্থায়ী প্রেম, সুবর্ণ সকাল?
সোনালী স্মৃতির পিঠে
স্মৃতির বর্ণালি সুই-সুতোয় মালা গাঁথি রোজ
যেন কখনো না ছিঁড়ে সেই স্মৃতির মালা
ফিরে যাই আজো সেই সুবর্ণ অতীতে
যেখানে অজস্র প্রিয়মুখ উঁকি দেয় রোজ
যেখানে জীবন্ত প্রিয় চোখ প্রিয় ঠোঁট
প্রিয় পিঠ পিছু ডাকে এখনো ইশারায়;
কিছু স্মৃতি করে রাখে সতেজ, সচল
কিছু স্মৃতি করে দেয় অজান্তে অচল
কিছু স্মৃতি করে দেয় বিব্রত বিবেক
কিছু স্মৃতি ভিজে যায় চোখের জলে
কিছু স্মৃতি ফোটায় আজও অজস্র অর্কিড!
প্রিয় সে স্মৃতির পিঠে ঠোঁট রাখি প্রথম যেদিন
দেখি তাতে খেলা করে সৌন্দর্যের রূপালি কিরণ
সোনালী ঠোঁটের রঙে সেই পিঠ রাঙালো যখন
তখনই তোমার সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র হলো স্থির
অবেলায় অপরাহ্নে হলো পরিণয়!
যখনই চোখ পড়ে সোনালি সে স্মৃতির পিঠে
অবাক মুগ্ধতায় ফিরে যাই প্রিয় গুলবাগে
ফোটাই নান্দনিক স্মৃতির গোলাপ!
এভাবেই কিছু স্মৃতি বিস্মৃতির ছিন্ন ইতিহাস
যেমন উড়ে গেলে স্মৃতির পাখি পড়ে থাকে নিঃসঙ্গ সে নীড়
তবু স্মৃতির পিঠে কিছু স্মৃতি জেগে থাকে রোজ
যেমন কথার পিঠে কিছু কথা বলা হয়ে যায়!
কী কথা বলছে স্মৃতি? সে কি এক চলমান রীতি?
যুগ থেকে যুগান্তরে জেগে থাকে স্মৃতির দোয়েল…