স্পর্শন
তোমাকে আমি পথের মাঝখানে ছোঁবো,
হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে
সারসের মতো তুলে নেব আধখোলা ঠোঁটের ঝিনুক;
তোমাকে ছুঁয়ে দেব মাছবাজারে
তুমি চোখ-পেট-কানকো ছুঁয়ে রূপালি ইলিশ—
আর আমি পুচ্ছ বাঁকিয়ে পায়ে ভর করে
ঝাঁপ দেব থলের ভেতর।
তোমাকে জলে ছুঁয়ে দেব ডুবসাঁতার
নখাগ্র থেকে চুল প্যাঁচাব আপাদমস্তক,
তোমাকে আমি পথের মাঝখানে ছোঁবো
নেশাতুর যুবক সন্তর্পণে ছোঁয় যেমন—
কিশোরীর লাল চোলি…স্ফীত ডুমুরের ফল,
কুয়াশা যেমন ছুঁয়ে রাখে মৃত হেলেঞ্চার বুক
যেমন করে অবরোহণে মধ্যমা ছোঁয় নিষাদ!
ঠিক তেমন করে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে
কাদাখোঁচা পাখির মতো খুলে খাবো পিঠ
সারসের মতো তুলে নেব আধখোলা ঠোঁটের ঝিনুক—
তোমাকে আমি পথের মাঝখানে ছোঁবো!
এই জ্বর ঘোর লাগা রাতে
এই জ্বর ঘোর লাগা রাতে
তোমার শরীরে গজাই
কয়েকশ একর কাগজীলেবু বন,
দুধে ভেজা রুটির মতো
শুষে নিতে থাকি অধরান্ত জিভ
আঙুল ডুবিয়ে রাখি অতলান্ত গহ্বরে
অপাঙ্গ-জল, জলের আঘাত
রোমে রোমে মন্থিত শ্বেত পারিজাত!
ফের অতিক্রান্ত কালোয়
আবেস্তার পাতায় পাতায় খুঁজি—
শিফা-ই-গুল;
এই জ্বর ঘোর লাগা রাতে
কেন আহরিমান খুলে রাখে বুক!
আমি সত্য-শিব ভুলে খুলে দেই গোপন দেরাজ,
চুষে নিতে থাকি তোমার অধরান্ত জিভ;
এই ঘোর লাগা রাতে কুয়াশার হোমকুণ্ড ভাঙে
নামে ধুন্ধুমার পীড়ন,
জন্মান্ধ চোখ নিয়ে দেখি—
আঁধারে ঝরে আছে পারস্য গোলাপ!
সুরতনামা
শবনমে ডুব-পদ্ম তোমার
উলম্বে তিলক-কুমুদ দোলে
হিজল-জটার মসনদে এক
বহুভূজা ধুতরা খোলে।
হাত-কল্কির ভাঁপে তাপে
ওষ্ঠ-অধর ঢ্যাপ ফুটে খই
নীলকণ্ঠে বিষহরি
ডম্ব্র নাচায় তাথৈ তাথৈ।
হে দিগম্বর, হে জটাধর
তুমি দংশিলে অমৃত পায়
কেবা আছে তোমার মতো
জলের তলে তৃষ্ণা বাড়ায়!