যারা তোমার পিঠ চাপড়াচ্ছে
যারা তোমার পিঠ চাপড়াচ্ছে
তারা একদিন
সরে পড়বেই
যারা এখন বেশি চিৎকার করছে
তারা একদিন
শিলাখণ্ডের অধিক বোবা হয়ে যাবে
যারা এখন অপমানে মাথা নিচু করে হাঁটে
তারা একদিন
সবচেয়ে সম্মানিত বোধ করবে
যারা আজ কাঁদছে
তারা একদিন
দেখে নিও খুব হাসবে
যারা ধর্ম ধর্ম করে ফেনা তুলছে
তারা একদিন
সবচেয়ে অধার্মিক প্রমাণিত হবে
যারা এখন খুব বাঁচতে চায়
তারা একদিন
নিজেরাই আত্মহত্যা করবে।
জীবন আর মৃত্যু কতটা বিপরীত
অস্তগামী সূর্যের তাপ
আমরা শরীরে মেখে
পার হতে চাই শীতরাত্রি অন্ধকার
দিনের ছায়া পড়ে থাকে
ঘাসে শুকনো পাতায়
কে আর মনে রাখে স্মৃতি বেদনার?
পাখিরা ফেরে না পুরনো বাসায়
বুনেছিল যদিও বাসা
ভালবাসা আর খড়কুটো দিয়ে
স্বপ্নের বাসা আর
শখের সংসার
ঝড়ের নিষ্ঠুর হাওয়া যায় নিয়ে
এখানে সন্ধ্যা নামে হিমরাত্রি গাঢ় শীত
আমরা বুঝিনি এখনো
জীবন আর মৃত্যু কতটা বিপরীত!
সুতোর ওপর হাঁটছি
এ কোন মৃত্যু!
যতটা জাগায় শোক; তারও চেয়ে বিস্ময়
বাতাসে মৃত্যু
স্পর্শে মৃত্যু
মৃত্যু আঘ্রাণে
মৃত্যু-শকুন ঘিরে ফেলে লোকালয়
কী বিষ মাখানো মারীর ছোবলে
আমরা জানি!
তবু দেখাই
তামাসার সার্কাস
সময় পাকায় মৃত্যুর
নীল ফাঁস
আমরা নেচে নেই; যতটুকু জানি নাচ
দিন কালো তমসায়
অন্ধকার
বুকের কাছে মারী খুব টের পাচ্ছি
তবু সভ্যতার
গর্ব নিয়ে
আমরা মানুষ সুতোর ওপর হাঁটছি।
পুরনো কবরের শ্যাওলার চিহ্ন
পুরনো স্মৃতি ফিরে আসে
পাখিদের ঠোঁটে
পুরনো গল্পগুলো আজও
সত্যি হয়ে ওঠে
পুরনো দুঃখ কখনো ফিরে আসে
বাতাসের ঝাপটায়
অন্তর্জালে
কখনো পুরনো মুখ ফিরে আনে
দর্পণে
নিজের মুখের দিকে তাকালে
অতীতের গাঢ় অন্ধকার
একদা পিছনে টানবে তোমাকে
পুরনো কবরের শ্যাওলার চিহ্ন
মনে জমে থাকে।
বনের ভেতর ক্যাম্পে
বনের ভেতর ক্যাম্পে রাত্রি নামে দ্রুত
কুয়াশার মতো
ঘন হয়ে আসে অন্ধকার
বনের ভেতর রাত
বন্যরা দ্রুত পা ফেলে ঘাসে
তাদের প্রাণের ভয় লোকালয় থেকে আসে
বনের ভেতর ক্যাম্পে রাত্রি নামে দ্রুত
ক্যাম্পের ভেতর মদ-রুটি
ঝলসানো মাংসের ঘ্রাণ
বনের ভেতর সভ্য মানুষ এলে
থেমে যায় পাখিদের মিলনের গান
সতর্ক হায়নার কান; বাঘও ভয়ে ত্রস্ত
বনের ভেতর ক্যাম্পে রাত্রি নামে দ্রুত
বনপ্রেম নয়; ক্যাম্পের ভেতর
বন্দুকের ভয় আর কসাইয়ের ধারালো ছুরি
মানুষ বনের ভেতর হিংস্রতা শান দেয়
বন্দুকের ট্রিগারে হাত
বনের ভিতর রক্তের দাগ; রক্ত রক্ত রক্তপাত
বনের ভেতর ক্যাম্পে রাত্রি
নামে দ্রুত।