গোছগাছ
কোথায় শিখলে তুমি—
এ অক্ষরমালা, কে দিল প্রেরণা এই মন্ত্র-উচ্চারণে,
কিসের সাহসে বলো—আমিই গোছায়ে দেব।
—তুমিই গোছায়ে দেবে।
তুমি ছাড়া আর কে আছে গোছানোর? এলোমেলো
হয়ে আছে ঘর, তার চেয়ে বেশি এ জীবন।—তাই।
দোলনচাঁপা
আমার হাতের দোলনচাঁপা, তুই সাদা পক্ষী হইয়্যা যা।
যা উড়ে তার শুভ্র হাতে, এই দুপুরবেলার বিরান রাতে
বল গিয়ে তার কানে কানে—শহরপুরের ক্লান্ত রোদে
খুব একা কেউ ডাকছে তোকে।
বস গিয়ে তার বুকের কোনে, নরম ওমের আদর নিয়ে
বল গোপনে—যেন একটু হলেও জায়গা রাখে—সে
যতনে। আমার হাতের দোলনচাঁপা—পাখি হইয়্যা তুই
তার কাছে যা।
দোহাই রে ফুল, উড়াল দে’ যা। উড়ে উড়ে তুই—তার
কাছে যা। তার কাছে যা।
সুখপুর
দেখো,
মানুষের চেয়ে আমরাই সুখী হব।
জীবনের সিঁড়ি বেয়ে ওই নিয়তির পথ গোছানোর
চেয়ে ঢের ভালো কাঠবাদামের দুপুর। ঢের ভালো
ওই ভিড়ের সবুজ বাস। দূরবর্তী পরিপাট্যের চেয়ে
ঘামে ভেজা শরীর ভীষণ সুখের!
সুখ,
আমাদের হাতের পুতুল, নাচে আঙুলের ইশারায়।
একদিন
একদিন বিকেলের আগে থেমে যাবে পৃথিবীর সব ঘড়ি।
ওই সংসদ পার হয়ে আর আমাদের উৎকণ্ঠা জাগবে না
ফেরার।—চলন্ত বাস হয়ে যাবে জঙ্গলের পুরনো কেবিন
যাত্রীরা সব মহৎ, বৃহৎ বৃক্ষ!
শুধু তুমি আর আমি বসে রব চোখে চোখ রেখে। তারপর
যা হয় হোক এই পৃথিবীর!— তোমার আমার।
মুদ্রার উল্টোপিঠে
দ্বারে দ্বারে বন্ধ দরজা, গিয়ে দাঁড়াবো কোথায়,
আস্তে আস্তে নামছে আকাশ, দাঁড়াচ্ছে মাথায়।
নামতে নামতে পাতাল খুঁড়ে, যাচ্ছি রসাতলে
জ্বলে জ্বলে লাগল আগুন পোড়াচোখের জলে।
দৌড়ে দৌড়ে ঘর ছেড়ে যাই, দেয়াল কারাগার
বাস্তবতায় আলো ছিল—নিয়তিতে আঁধার।