উচ্চারণ
আমরা পেয়ে যাব পূর্বজদের পায়ে চলা পথ
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ—কতবার
কত মানুষের ভিড়ে বৃক্ষেরা জন্মেছিল
কত মানুষের চোখে ভরা স্বপ্নের মতো;
তুমি এক পঙ্ক্তি সৌন্দর্য হয়ে আছ
ফের স্লোগানের মতো ধিকি-ধিকি জ্বলছ
জ্বলছ-নিভছ জোনাক—আমরা হেঁটে যাব
রিক্ত পথে বহুময় একাকিত্বে; কতবার পেয়ে
হারিয়েছি ঐরাবতের পাল—কতবার হয়ে গেছি
সাঁতার পটু সাদা কিশোরের শার্ট; উড়তে-উড়তে
হাওয়ায় লুটিয়ে পড়েছি, লুটিয়ে পড়েছি তুমি-আমি
. সঙ্ঘযূথের দীপ্র উচ্চারণে।
মুক্তিবেগ
আকাশে বড় চাঁদ। বুড়ির চরকায় তুলোর জট
ভেঙে যাচ্ছে ক্রিস্টাল নীরবতা—
আমাদের বাতাস থেকে উড়ে চলে যাচ্ছে শিমুল ফুলের ঘ্রাণ
পুড়ে যাচ্ছে মাটি, দিঘি, রামপ্রসাদের ভক্তিগীতি; সব তুলো
উড়ে যাচ্ছে পৃথিবীর বাতাস ছেড়ে; ঘুমিয়ে পড়েছে স্বাতন্ত্র্য
আমরা গোপনে হারিয়ে ফেলেছি অতীবর পরাজয়
আকাশে চাঁদের আলো—তুমি হু-হু বাতাস
আমি শালিকের ক্রন্দন—আকাশ ভেঙে পড়ে যাচ্ছে কিংবদন্তি
চরকার চাকা, সাদা থান, ক্রিমির মতো কিলবিলে সুতোগুলো
সিসা
দু’জনে পেয়ে গেছি হরিণের খুর—মড়ক লাগা
মাছিদের শেষ গুঞ্জন; ঢাকার আকাশে
আজ অনেক ধোঁয়া, দু’জনে মিলে হয়ে আছি
পালকের নরোম শ্বাস। গাছেদের পাতা থেকে
মুছে গেছে সেই কবে বসন্তের দাগ—
অজস্র বেগুনি আলো আর ট্রাফিক হলুদ রিরংসায়
না, এটা প্রাচীন নাটকের একরৈখিক বিন্যাস নয়
এ শহরের সব ক’টি ইটে লেগে আছে কসমোপলিটন ধুলো
ভুলে গ্যাছো; ভুলে গ্যাছো এই শহরে ধুলো উড়িয়ে
বেজেছিলো ঘন অশ্বখুরধ্বনি—আমরা এসেছি
সেদিনই তো—সিসার মতো ধীরে-ধীরে গলে যাচ্ছে রোদ