রূপকথার ডানায় রাধাচূড়ার চোখ
কী সব মাতাল চিরকুট পকেটে; থামিয়ে রেখেছিস হাতের কথা!
যাপনের আঁচল ছুঁয়ে এসে খুলে যাচ্ছে ভয়-হিংসা―
বাঁকা পথের বিশদ লোককথা…
এভাবে ডাকলে কী করে ভুলে যাবি ঘাসের পালাগান;
নরম অরে দাঁড়ানো মেদহীন স্মৃতির আওয়াজ।
অন্যরকম অভাব আমার হৃদয়ের মলিনতা খুলে
বাজিয়ে দেখেছে রণের পরাপার―
হলুদ বাতাসে খুঁজে পেতে গিয়ে নগরী ডাহুক
দরিদ্র গতি আমার হারিয়ে ফেলেছে রূপকথার ডানা…
এখন এমন সুরাসুর টানে
রাধানৃত্যের কোলাহল ভুলে আমি এক পালাগান
একা থাকি―একা লিখি―নিজস্ব অভিধান…
কালোছায়া ও নিঃসঙ্গ নিমফুল
সহজ রাস্তাটা আরো দু-চার পাতা সহজ হতে পারতো। কিছু কঠিন বানানে ভুলে যেতে পারতো কালো মানে ভয়!
কোথাও যদি একটু ছিঃ ছিঃ করার স্বাধীনতা থাকতো তাহলে নিজেকে নিলামে তুলে নিজস্ব কঙ্কাল থেকে হাড়গোর বিক্রি করে দিতাম। চলে যেতাম নিয়মের মধ্যমা ছেড়ে নিমফুলের ইশকুলে! কালোছায়ার সদর দরজায় অনশন চলছে; শহরের গভীরে প্রেমিকের লাল নাটক! তোমাদের কবর থেকে আমাকে কিছু ওয়াজ ইমেল করো―পবিত্রতার দোহাই ভুলে সাঁতার দেখে বাকি পথের ধুলো কুড়াবো। রঙের আলনায় গুছানো হাসি আর ভাল্লাগে না! বাকি আলোটুকু বিদায়ের রথে; নিয়মের পকেটে রিকশার সংলাপ। রাতের হাজতবাস শেষে মিথ্যে মুদ্রণে ছাপা হচ্ছে যেসব সুখ নিমফুলের অর তার কিইবা জানে! সে কেবল আষাঢ় ভেবে পুরানো নৌকায় ফিরিয়ে নেয় দগ্ধ প্রেমের ভাইরাস, নিঃসঙ্গ ছায়ার রোজগার…
শীলার বায়োগ্রাফি ও রোদ্দুর মাতানো একটি দুপুর
অবশেষে সব আলো ডুবে যায়;
. মুছে যায় সব অভিমান।
ঘৃণার অন্তর পুড়ে ঘনিয়ে আসে আহত বাতাসের শখ!
শীলার হাতে কোরাস হাসে ভবঘুরে রোদ্দুর। বিশদ জবানে ঢেউ ; অস্ফুট আলোয় নীরব মোহর। ঠোঁটের অলঙ্কার সকালের পিঠে লিখে দিলে দরদ; সমুদ্রের বাহুতে প্রিন্ট হয়ে আসে শীলার বায়োগ্রাফি। আড়ালের কীর্তন জ্যামিতিক স্বরবর্ণে―জ্বলে গেছে সব অভিমান। আমি দ্বৈতপাঠের সহচর, দারুণ অসুখের ঝড় পুষি। আমাকে দাও প্রেমের গ্রাম মিঠে ঘাম বেচে কিনি তবুও এক লহমা দরদ। অনুভূতির মখমলে জমা রাখি তৃষিত বায়োগ্রাফি! বাকি পৃষ্ঠা আমার; সেখানে গচ্ছিত থাকুক রোদের গীতিহার…
তিলোত্তমা ও বেদনার রাজহাঁস
কমলা রঙের হাওয়া এলোমেলো করে দিয়েছে কান্ত ভোর। হয়তো আমাদের শিঙা নেওয়া উচিত ছিল; আমরা ভুলে গেছি নতুন রাস্তার বাঁক। আরও নগণ্য কিছু অজুহাত বেহাত করে কোনো এক দুপুরে চলে গেছি। তখনো তোমাদের নাকফুল সুখের জোছনা কুড়ায়! এই অপরাহ্ণ অসুখ বাজিয়ে যাচ্ছে নোঙড়ের ভাষা। আমাদের ইশকুল ছুটি হয়ে গেছে; খোলা মাঠের কপালে গোধূলি তোমার আমাকেও ভিজিয়ে রেখেছে রোদ্দুর পোড়া আতরে… তিলোত্তমা ঢেউয়ের চোখ বরাবর রক্তের শোক; মুখিয়ে তবু শেষ রাতের কোলাহল। সেই সকালের কমলা হাওয়া মাথার দেরাজে কেঁদে কেঁদে বেহুশ; মগজে রোদের করতালি।এই অথৈ আন্ধার থেকে তোমার ছায়া আরও কত দূর…
সাঁতারু মুদ্রার লাটিম
কান্নার প্রতিটি কণা এক একটি পাহাড় হয়ে যদি কোনো দিন ফিরে আসে… তবে কি ভাষায় তাঁকে বোঝাবে তুমি―বোঝাবে তোমার অহম। শিকারী পথের সাথে জোড়া কবুতর এদিকে-ওদিকে ছুড়ে দেওয়া গানের মতোন নিঃশব্দে বেডরুম-কিচেন-খালি শরীরের দগ্ধ গন্ধে পেখম খুলে দিবে?
অন্যসব পাখির পায়ে পায়ে যুগল ভাবনা মিঠেদৃষ্টিতে আকাশ দেখি―বুকে শিরিষের হাওয়া বেধে নিহত পেলবতার বয়ান মুছে রচনা করি দৌড় বিছানো আঁচল। আমি সেখানে তোমার সিঁথিজুড়ে হাসির কলি ছিটিয়ে দিয়েছিলাম―সরব আলোয় কচি টান কেমন টানে ছিল আমাদের… সে সব নরম উষ্ণতা…কোমল কফির বাড়ি চিনে চলে গেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের দেশে। এখন আমার চোখে আফগানিস্তানের লাল আর্তনাদ লুটোপুটি খায়.. ইরাকের আকাশে বোমারু বিমান আস্তে করে শাসনের তেজে বলে এভাবে হাসা নিষেধ…মিশরের ট্যাংকবাহী আতঙ্ক মাথার কবজা খুলে উচ্ছ্বল সময়ের হিসেব চায়..। আমি একটি একটি করে হাহাকারের কয়েন জমা করছি… নিঃসঙ্গ রাত্রি জমা করছি…আর তোমার ফেলে যাওয়া আচর জমা করছি আল ধরে হেঁটে; মুত্যু চলে এসেছে বুক বরাবর। আরেকটু কাছাকছি আসো সোনার ময়ূর তোমার পিঠে চরে বসে পড়ি। উড়িয়ে নিয়ে যাও ভিন্ন পথের মোড়ে। সেখানে যতোটুকু কান্না একা একা আমাকে গুছিয়ে ডাকবে তার উরু দেখে চোখের কপাট নিভিয়ে রাখব।