ভেবে দেখো
ব্যাগ ভরে কিনে এনে
রাজনীতি দৈনিক,
ঘরে ফিরে খেয়ে দেয়ে
হয়ে যাই চৈনিক।
বৈদিক যুগ থেকে
ধার করা কাব্য
কত আর এই দিয়ে
রীতিনীতি ভাববো।
ভাবনার যত কিছু
ভেবে দেখ মস্তকে
কত আর মুখ খুশে
পড়ে রবে পুস্তকে!
প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ,
জীবনের শিক্ষা,
এইসব থেকে তব
নিয়ে নাও দীক্ষা।
যুগে যুগে কালে কালে
পুঁথিগত বিদ্যা
সময়ের তালে পড়ে
হয়ে গেছে মিথ্যা।
পুঁথি আজ লেখে যত
বড় বড় পণ্ডিতে,
মুক্ত সে নয়তো
বাঁধা আছে গণ্ডিতে।
তাই বলি ভেবে দেখো
নিজেদের কাজটা
সন্তানের মাথায় ঝুলে
আকাশের বাজটা।
বেঁচে থাকা
শুভ দেখো, ওই সস্তা গণিকাকে
সন্ধ্যের পর পার্কের ঝোঁপে,
মাঝরাতে ফুটপাত কিংবা ওভার ব্রিজে
সামান্য অর্থের বিনিময়ে নিজেকে
শুইয়ে দেয় যেমন তেমন পুরুষের বুকে।
সকালে সেই সামান্য অর্থে খাবার কেনে
জারজ সন্তানের জন্য
ওভাবেও বেঁচে থাকা যায় শুভ
চলো একটা দিন ওই গণিকার মতো বাঁচি।
দেখো শুভ ওই বুড়ো রিকশাওয়ালাকে
যার একমাত্র টগবগে যুবক ছেলেটা
রানা প্লাজার ধ্বসের নিচে পিষ্ট হয়ে গেছে
সেই সাথে পিষ্ট হয়ে চুরমার হয়ে গেছে
ওই বুড়োর সব সাজানো স্বপ্ন।
তবু বুড়োটা বেঁচে আছে,
চল একটা দিন ওই বুড়োর মতো বাঁচি।
ওই দেখো শুভ
ফুলের মতো সুন্দর নিষ্পাপ পথ শিশুটি
যে জানে না তার পিতা-মাতার খোঁজ
জানে না বেঁচে থাকার কারণ
তবু বেঁচে আছে।
চলো একটা দিন
ওই শিশুটার মতো বাঁচি।
দেখো ওই গণধর্ষিতা কিশোরীকে
নারী হওয়ার আগেই কতগুলো পিশাচ
যাকে দিয়েছে যৌবনের কুৎসিত অভিজ্ঞতা
সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা বুকে নিয়ে
সে আজও বেঁচে থাকে প্রতিদিন।
চলো ওর মতো করে বাঁচি একটা দিন।
যারা মরে গেছে, তারা তো বেঁচে গেছে
যারা বেঁচে আছে তাদের
বেঁচে থাকাটাই কঠিন।
তবু বেঁচে থাকে, থাকতে হয়।
আমাদের চাওয়াটা কি খুব বেশি রে শুভ?
আমরা তো কেবল চাই
মৃত্যু অব্দি বাকি আছে যতদিন
মানুষের মতো বেঁচে থাকি প্রতিদিন!
বরফের হৃদয়
ঝরা পাতার বুকে জমে থাকা
নিঃশ্বাস হয়ে বেঁচে আছি
পিপিলিকার স্পর্শে পাই
জীবনের ঘ্রান
তারা চুরি করে নিয়ে যায়
আমার প্রাণ।
বরফের হৃদয় ছুঁয়ে দেখো
জলের আন্তরিক হাহাকার
সেখানে রয়েছে জমাট।
আরও পড়ুন: নির্বাচিত নবীনের কবিতা