চার.
মহা সময়ের ঝুঁটি-ধরা
অতৃপ্ত গোলাপ রঙহীন ঝরে গেলে
আমরা পালাই; আর
আমাদের নিঃসঙ্গতা
ফেলে যাওয়া সাপের খোলস।
স্বজনশরীরে টেনে নিতে
পুনর্বার আসবে না কেউ
সর্পছাতা ধরে রেখে নিজের ফণায়।
এই-যে আসক্ত ছায়াসমাধান:
দেয়ালপুষ্পের মায়া ছেড়ে উড়ে যায় মর্গশালিকেরা
আকাশগ্রন্থের নীল অক্ষরে উড়ন্ত ডানা তখনইতো ভাষা পায়;
আমরা ছিলাম সেই ভাষার প্রেরক।
সমুদ্র বন্দনা শেষে যে-ঢেউ ঘুমিয়ে থাকে আরক্ত শয্যায়
তাকে জাগিয়েছি,
নিস্তব্ধ অটোরিক্সায় বিবস্ত্র সবুজে
এলিয়ে পড়েছে বেতপ্রহারের গোপন সপাং।
স্বপ্নলাঞ্ছনার দিন পেরিয়ে এসেছি বলে
আমরাকি তরঙ্গহরিণ? জলবনায়ন আসন্ন জেনেই
নেচে নেচে ভাসতে চেয়েছি?
পাঁচ
আহা! কিরণকীর্তির মিঠে রোদ
পরিত্যাক্ত পাখির বাসায় যে-নিভৃতি
একা একা ভোগ করে জমাট প্রহর
তাকে লোভ হয়; মেঘব্যাকরণে তবু কোন
অশ্রুসমস্বর পাতায় পাতায় কেঁপে ওঠে।
ইচ্ছে করে রোদপেখমের এই নিশ্চুপ বেদনা সঙ্গে নিয়ে
পূর্ণিমাটুকরো হই, আর
খরগোশ মুখরিত বন্যদীপায়ন থেকে আলোর প্রমোদ
নিজের ভেতরে নিয়ে বাইরে ছিটাই।
জীবনের সমস্ত বুদ্বুদ
সবুজ আস্তরে ঢেকে যাক…
ছয়.
আজ এই ভ্রমণবেলায়
অভয়সূর্যকে দেখি প্রচ্ছন্ন বীরের মতো—
সুদীর্ঘ লাগাম ধরে রথের চাকায়
আমাদের টেনে নিয়ে যায়;
আমরা অটোরিক্সায় আর অলঙ্ঘ্য বিকেল
ধেয়ে আসে; যেন রিক্সাটাই রথ, আর
লোলপৃথিবীর গুপ্ত আলেয়ামেশিন
অন্ধ পাতকের হাতে ছেড়ে দিয়ে
হাসির ব্রহ্মাণ্ডে দেখি নক্ষত্রসমর
যুদ্ধবাজ পিঁপড়ের বাড়ি, তার মাটির শকট
বেলফুল ঝরে গেলে যে-সুগন্ধ ও সংশয়
হাতের নাগালে পরিতাপময়, তাকে ভালোবেসে
একটি দারুণ পেঁপেক্ষেত
যেন ক্ষেত নয়, সাদা পলিথিনে যৌবন জড়িয়ে
কোনো এক ধিবার হাট, সূর্যের পরতে
নিজেকে ঢাকতে চায়; আমরাতো ক্লান্ত জামানার
বিহ্বল ডাহুক, রাত্রিচরাচরে বিধবার নিঃসঙ্গ দুপুর
বিছানায় কাত হতে দেখি;