জ্ঞান
বিন্দুর সমাপ্তিরেখা দেখাতে চেয়েছ
হাঁটুগেড়ে বসে বুঝিয়েছ আকাঙ্ক্ষার সীমানাপ্রাচীর
বোধের অতল আকাশের কোণ ছুঁয়ে
ঢিপ ঢিপ বুকের ধ্বনিতে যে রেখা ক্রমশ দৃশ্যমান
তাকে অবলুপ্ত করে চেনাতে চেয়েছো
পাখির ডানায় ভরে থাকা বাতাসের প্রেম
প্রজাপতিময়, ঘূর্ণমান।
আমিও বুঝেছি
দশদিগন্ত হারিয়ে
ভালোবাসা গতির পালকে ঢাকা
নিপাতিত এক স্থবির বিলাস।
সম্পর্ক
কোথাও তো যেতে পারতাম!
যাইনা কোথাও কতকাল
পায়ে হেঁটে অথবা গাড়িতে
রিকশাও মন্দ নয়
টুংটাং ধ্বনিতে ইশারা ভেজা ডাক
ধীর লয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে চলে ছায়ার ভেতর।
শঙ্খস্বরের উজানে চোখে চোখ রাখি না অনেকদিন
নগরী এড়িয়ে দূরের নির্জনে হেঁটে যেতে যেতে
জানতে চাও না আর পড়া হলো কি না
শঙ্খঘোষের জার্নাল কিংবা নেরুদার অনুস্মৃতি
অথবা টমাস মান,
আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই আর
তর্ক, যুদ্ধজয়, হারজিতের অভিলাষ
আমরা কেমন করে যেন ভুলে গেছি
কেউটের ছোবল ডিঙিয়ে কিভাবে হারিয়ে যেতে হয়
দশদিগন্ত ছাড়িয়ে আরও দূরে ইচ্ছেগতির ডানায়।
আজ গ্রহণের কাল
ভালোবাসাহীন গল্পগাঁথা জুড়ে ঢাকের তরল শব্দ
প্রতিধ্বনিময়
আর আমাদের চোখে ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরের শিখা
হৃদয় চৌকাঠ শব্দহীন
মরণোত্তর দিনের গল্পে আমাদের মায়ার শকট
একটু একটু করে ক্ষয়ে যায়।
মূর্খ জেদ
মূর্খ জেদ আমাকেও নাচালো এক পাক
কুণ্ডুলি পাকানো অজগরের ঘুমে ভাসা দুই চোখ
গল্প বলার পাড় ভেঙে নেমে গেলো নীল জলে
তবু এলোনা বৈশাখ—লণ্ডভণ্ড করে দেওয়া কোনো ঝড়
বেপরোয়া ক্রোধ আলস্যের ভাঙা ফ্রেম ছেড়ে
নেমে এলো না ঝংকার ছড়ানো তপ্ততায়
কেবল আমিই নাচলাম, ঘুরলাম আর বেঁকে গেলাম
দূর পাহাড়িয়া বাঁক থেকে তুলে নিলাম
শীর্ণ অথচ প্রলম্বিত এক মুমূর্ষু শ্বাস।
দূরের বৃষ্টি
দূরের বৃষ্টিতে ছুটে গেলো কাকভেজা জীবনের তীর
মধ্যাহ্ন বিষাদ ছেড়ে ঝরে গেলো এলোমেলো ভোর
প্রাচীন ব্যর্থতা ঘুরে ফিরে আসে, বসে দিকচিহ্ন পারে
বহুকাল ধরে ডাকে, বলে আয় দেব তোকে মায়া ভরা
ঘোরের ঘূর্ণিতে ঢাকা এক ফালি আয়ুর সংসার।
আমি হাঁটি অতি ধীরে যাপিত চিত্রের বোঝা কাঁধে নিয়ে
পায়ে পায়ে সুরখোয়া রাত নামে
ছুটে চলি আলোর কাফেলা ছেড়ে
রাত শেষে দূরের বৃষ্টিতে ছায়া রেণু মাখামাখি
বিন্দুতে সন্ধিতে।