সমুদ্রপুত্র-দশ
প্রাণের সাথে প্রাণ মেলাতে চাইছো নির্দ্বিধায়
এমনই একটি চাঁদনি রাতের অপেক্ষায়,
অথচ আমাকে আমি সঁপে দিয়েছি সেই অমাবস্যায়।
মনের ভাষা পড়তে জানো না, তুমি কেমন কবি?
সাগরের মতো উদাত্ত কণ্ঠে শুধু ঢেউ ছড়িয়ে দিতো
পারো রমণীর হৃদয় তীরে।
উগড়ে দেওয়া আবর্জনা নিয়ে যেমন থাকে কলাতলী
কিংবা ইনানি বিচ,
শিল্পী হইনি বলে তোমার দূরদর্শিতা আঁকতে অপারগ
ঠোঁটের নিচের তিলটাকে ছুঁতাম প্রেমিকা হলে
তবলার তালেও তাল মেলাতে পারি না,
পায়ের সাথে পা মিলিয়ে হাঁটতে বের হতাম রবীন্দ্র রচনাবলি নিয়ে।
একই সুরে গেয়ে উঠতাম ‘রাঙা মাটির পথ’।
অথচ আমি কিছুই পারি না চাঁদনি রাত নেই বলে।
আশীর্বাদ-সাতাশ
আলো-আঁধারের পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন খেলার নাম দারিদ্র্য।
যেখানে পিতার লাশ বহন করার জন্য হলেও ঘূর্ণায়মান আলোর শকটের কথা ভাবা যায় না
ট্রাকের শক্ত বিছানায় রাখতে হয় মাটিতে শোয়ানোর আগেই।
দেওয়া যায় না মৃত্যু পূর্ববর্তী কোনো ঝলমলে কিরণ,
একটা দেয়াল থাকে না চিহ্নিত করার।
জীবন ফুরিয়ে যায় অবেলায় অনাদরে আশীর্বাদের ভারে।
আশীর্বাদ-আটাশ
তিন রুমের এই বাসায় জীবনের সবটুকু স্বপ্ন বুনেছি।
সাতাশ বছরের দীর্ঘশ্বাসের অবসান ঘটে,
যখন আমার হাত রাখলাম মায়াময় এক হাতে
বীজটা তখনই নাড়া দিয়ে ওঠে,
জীবনের চেয়েও আরো ক্ষুদ্র একটি কাজে নির্ভর ছিল বাসাটি।
দিনের অন্ধকার ঘুচিয়ে যেতো আমার স্বপ্নের আলোয়,
জীবনের পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে আজ সব হারিয়েছি।
একলা থাকার সুরে আমিও গেয়ে উঠলাম অবেলায়।