উৎসব থেকে চলে এসেছি
তোমাদের উৎসব থেকে আমি নিজেই এসেছি চলে
অভিমান ক্ষোভ বেদনা কিছুই নয়
আমার শরীরী উপস্থিতি তোমাদের আনন্দে বিবর্ণ
কবিতা লিখুক—চাইনি কখনো।
তাই নিজেকে নীরবে আঁধারের চাদরে জড়িয়ে
চলে এসেছি নিভৃতে—উৎসবে চাইনি কষ্টের রঙ
এরকম এক উৎসব তোমাদের করে দেবো বলে
স্বপ্ন আর শ্রমে নিজেকে ভুলেছি রোদ্দুর যৌবন
নিজেকে আড়ালে মহতের তকমা লাগাবে ভেবে
অসত্যের পাগড়ি মাথায় দিয়ে নকলে বসাও
সুন্দরের ঝলমলে দারুণ রূপশ্রী উৎসবে।
এইসব ফাঁদ কিংবা জালপাতা আনন্দ শিখিনি
মাটির শরীরে মৃত্তিকা মনের কড়ি
বোঝে না তো এসব হিসাব
চলে যাচ্ছি কৃত্রিম এইসব উৎসব থেকে
অভিমান ক্ষোভ বেদনা কিছুই নয়
সব জলে ভেসে যায়
সব জলে ভেসে যায়
অন্ধ স্নেহ মমতা ভালোবাসা সব জলে ভেসে যায়
মিথ্যা গল্পের বেসাতি প্রবল স্রোতের মতো নিয়ে যায়
উজানে ভাসিয়ে-শক্ত পায়ে চাপা পড়ে
এক যুবকের হাড়খাটুনি কঠিন বিরান যৌবন;
সব জলে ভেসে যায়-স্নেহ মমতা আদর সব সবকিছু।
নিজেকে যে যায় ভাবো—দাঁড়িয়ে অবেলা
আমিও ভেসে যাচ্ছি—বুঝে গেছি এ সংসারে
ভালোবাসা অনর্থক-আত্মপ্রতারণা আর নিজেকে দেখানো
এই হলো মূলধর্ম—স্বার্থের গোয়ালে বন্দি বিবেক;
সব জলে ভেসে যায়—শ্রমের ফোসকা দাগ সব ভেসে যায়
অসহায় করুণ দুচোখে—ব্যর্থরা যে নৃত্য করে মিথ্যের পেছনে।
সব জলে ভেসে যায়
সব ভুলে যাও—ভুলে যেতে হয়—কপালের শ্রমজীবী ঘাম
একদিন উপহাসের ঢেউখেলা উপঢৌকন হয়ে ফেরে;
পৃথিবীতে এতটা সময় ভুল অঙ্কে কেটে গেলো
নিজেও ভাবিনি—ভালোবেসে বিরান যৌবন শ্মশানজীবন
এ সংসারে কে কার আপন—দিতে পারলেই মহারাজ।
কার বুকের কঠিন হাড় কতোখানি ভেঙেছে নিশুত রাত্রি
হিসেবের খাতায় সংসার লেখে না এসব
সব জলে ভেসে যায়—সব দীর্ঘশ্বাস দলিতমথিত হয়ে
কূলে কূলে ঘাই খেয়ে অপমানে ভেসে যায়
সরল বিশ্বাস তখনো দাঁড়িয়ে থাকে অবজ্ঞার বিষ
আনন্দে পান করবে বলে…
সব বেদনা হাসিমুখে স্বর্গের কথা বলে যায়
ভুলপাখি
এক ভীষণ অদৃশ্য কষ্ট
তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আমাকে জীবনবেলা
কতোটা ভুলের পাখি আমি
নিজেকে যে কতভাবে পোর্স্টমর্টেম করি।
নিজের রিপোর্টে নিজেই লিখি—
স্বার্থহীন অন্ধ যে জীবন
সে জীবন বড় বেশি অপরাধের;
ভুল অঙ্কে লেখা পুরো একটা জীবন।
জীবননাটক
বার বার মরে যাই
মরে মরে বেঁচে উঠি
জীবনের নাটকে আবার মরি
এইভাবে নদীও যে কত খেলা খেলে যায়
রঙ তামাশার কত ঢেউ এঁকে যায়
একদিন সেও নিজেকে হারায়
বার বার মরে যাই