এক.
তুমি খোলশ ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েছ ডানা
উড়ছ স্বাধীন এখানে সেখানে।
প্রজাপতির ওড়া দেখতে সুন্দর।
সে ভেসে যায়
ভাসিয়ে নে যায়
উড়ন্ত ডানার আকারে
আর সুবাস ছড়িয়ে পড়ে
সোনাদানা মনের প্রকারে
যে প্রকারে ওড়ে ওড়ে তুমি যাও
নিজেকে পোড়াও
আমাকে পোড়াও
কে কার সর্বস্ব সহায়!
খোলশ ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েছে ডানা
সে ওড়ে হেথায়-সেথায়
প্রজাপতি উড়ছে স্বাধীন পাখায় বসে আছে রায়।
দুই
ঢেউয়ের আকারে এসে
ভাসিয়ে নিলে সব।
শব পরে থাকে, মৃত মন।
অকারণ এই যত প্রেম।
সযতন না করে তারে হারালে।
ওই দূরে হাল ধরে আছে যে মাঝি
পাল তোলা মাতাল নৌকা বয়ে যায়
পাড়ে যেতে হবে তার
অজস্র ঢেউয়ের বিস্তার
তোলপাড় করে
অযথায়
আমারে চুবাতে চুবাতে
রতিতে গতিতে
তুমি নিয়ে যাও
কোন পাড়ে?
কোন রঙের প্রজাপতি রায়।
তিন.
শীতে সাইকেলে চড়তে অনেক আনন্দ।
আমার কোনো সাইকেল নাই।
শীত আসে আর যায়
আমি পড়ে থাকি নিরালায়
শীতের চাদরে চুমু খেয়ে যেসব প্রজাপতি ওড়ে গেছে বহুদূর
তারা ফিরে নাই আর
সাইকেল ঘূর্ণমাত্র পৃথিবীর মতো গোলাকার
নাট-বল্টু-স্ক্রুপ জানে
চুমুর উত্তাপের চেয়ে এত তাপ বিকিরণ কিছুতে হয় না আর।
আমার কোনো সাইকেল নাই।
শীতকাল যেসব রং ছড়ায়
পাখি পতঙ্গ এমনকি প্রজাপতির উড়াল হাওয়ায়
তারাও সাইকেল আরোহী হতে চায়।
শীতে চুমুর উত্তাপের কাছে হেরে
প্রজাপতি সাইকেলে চড়ে পিছে চড়ে রায়।
চার.
তোমাকে দেখি না আর।
অবদমনের ভারে নুয়ে গেছে যেসব অলঙ্কার
তাদের চকচকে শরীরে বাজে গুপ্ত অহঙ্কার
নিচু হয়ে আছে যেসব ব্যথা, মায়া ও সন্ধ্যার
অনুকুলে পাঠানো সকল অভিলাষ, অনুপ্রাস হয়ে
জিহ্বা ছেড়ে ধ্বনির উদ্ভাস বাতাসে হাওয়ায়
তোমাকে দেখি না আর।
পাঁচ
আমি তারে দেখি নাই খুলে
কার চোখে জগতেরে দেখেছে সে
অথৈ অকুল সায়র কার চোখে ভাসে
চিনি নাই যারে, সকাশে সে আসে কোন ভুলে!
আসে আর যায়
দূরে পাহারায় কতগুলো চোখ তড়পায়,
ভাসিতেছে ভেলার মতো বাণের জলে
নাচিছে অদৃশ্যের অসুখ ঢেউয়ের অতলে।
ভাসুক অযথা মন, নাচুক
দেখুক সে যত পারে খোলামেলা
শীতের পহেলা আমিও চেয়েছি তারে
সুচিস্মিতা, উদাস অনলা।
পুড়ে যাক যথাভাষা, যথা কিছু ভাব
যথামাত্র তৃষ্ণার আগুন নিভে
কিছুমাত্র শরীরে হারাক।
হারানো মনেরে খুঁজে কে পায় রত্নধন
শরীর যে বাসে ভাল সে কি ঊন-মন!
শরীরও তো চায় প্রেম
কিছু অম্লতা মনেতে ছড়াক
জগতের সমস্ত জল তোমার মুখ ছুঁয়ে
অকাতর ধূলির পৃথিবী ছেড়ে যাক।
ছয়
পুরনো ছবি সাদা কালো দিন
পুরনো মানুষ সাদা কবুতর
কবিতার ফুল গোলাপি ও লাল
নতুন পুরানে খেলে মন্থর।
পুরনো নদীর কত খেলা ঢেউ
ফসলের মাঠে প্রজাপতি ওড়া
পুরনো ধূলি জড়ানো গায়ে
নতুন পুরানে কত বোঝাপড়া।
হয় না তো শেষ পুরনো খেলা
নতুনের সাথে জমেছে ভীষণ
শীতল দিনে নতুন পাতারা
সূর্যালো হাওয়া করে আহরণ।
আমাদের মনে নতুন পুরান দ্বন্দ্ব হয়ে আসে
পুরনো ছবি উজালা মনে সাদা কালো হাসে।
সাত.
তোমাকে সনাতন রূপে পাই
নয়নে হারিয়ে প্রেম চোখ উপড়াই।
উপড়ানো চোখে নাই আগুন বা জল
সেই চোখ আয়না হয় জগৎ উজল।
অন্ধ হলে তবে খুলে যায় চোখ
তোমাকে দেখার আজ কত যে অসুখ।