চাঁদমুখ চাঁদে আর থাকে না এখন
আহা যন্ত্রণার সেতু কবির দুয়ারে তুমি পা ছাড়া কিছুই পাবে না। সেই নির্জন ফুল—যে একা একা ফুটে ছিল গাছে। সেও তো ঝরিয়েছে পাঁপড়ি…পবনের পালকিতে কী বার্তা নিয়ে এলে তুমি! লালসার ফণা তুলে কিভাবে ছড়াবে বিষ? ফাগুন শেষ হয়ে গেলে তোমার নিরালা ছাদে আর কোনো পাতা ঝরে না। পাগলের ঠোঁট ছুঁয়ে যে হাসি পালিয়ে গেছে দূর কোনো ফসলের মাঠে—কৃষকের কাস্তের কোপে ফালি হওয়া সেই হাসি—বলো তুমি কিভাবে লাগাবে জোড়া। চাঁদমুখ চাঁদে আর থাকে না এখন— বাঁশবাগানের ফাঁক গলে বেরিয়ে গেছে কোনো এক সুদূর নগরে…
দূরত্বের নিকট
যেভাবে এলে সেভাবে এলেই হতো
এই সবুজ বন খোলা রাখত চোখ—
দিগন্ত যেখানে হাঁটুমুড়ে বসে থাকে
সেখানেই উড়ছিল মোহনীয় চুল!
নিরাশার মেঘগুলো কেটে
এসেছিল সেই তুলোওড়া দিন
সংশয়ের ডানা মেলে
কমে ছিল দূরত্বের পথ…
যতটা সহজে এলে—
আসাটা তত সহজ ছিল না।
ক্ষমা করো বাংলা বিভাগ
কার জন্য খুলে রাখো ভাষার দরজা
মূর্খের চাদরে ফোটাও ফুলের ফোয়ারা
দেখো জোনাকিরা পড়তে আসে বনে
ছড়িয়ে যায় অমিত আলোর বর্ণমালা…
দেখো যে শিশু পড়তে শেখেনি আজো
মা ছাড়া শুদ্ধভাবে কিছুই ডাকে না—
কিভাবে শেখাবে তাকে এইসব শাস্ত্র-
ভাষাজ্ঞান, উপমা-ছন্দ-অলঙ্কার…
চালাকের চরকিতে নাচে তুরুপের তাস
মাটির গভীরে লুকায় ভাষার বেদনা—
তুমিই মহৎ হও আর খ্যাতিতে মহান
শেকড়ের কাছে গিয়ে আমি হব দাস!
রেখাচিত্রে অঙ্কিত
সর্প ঘুমায়ে থাকে
চঞ্চল হরিণীর চোখ
কেশর ফুলিয়ে সিংহ
ঢুকে যায় জামার ভেতর।
এলোমেলো চুলের মতো
উঠানে ছড়ানো মেঘ
ডেকে আনে গুণিনসম্মত
পানিপড়া—বাহুর তাবিজ!
রেখাচিত্রে অঙ্কিত নখ
তেড়ে আসে গলার নিকট
নীল হলে বিষের শরীর
চোখ খোলে বেহুলার নট!
মাকড়সার মতো
মাকড়সার মতো বিছিয়ে জাল
কার অপেক্ষায় গুনছো এই বিষণ্ন প্রহর—
আমিতো ক্ষুদ্র-তুচ্ছ-নগণ্য অতি
সময়ের ছাকনিতে কিভাবে ধরবে আমার প্রীতি!
চাইলেই ধরে রাখো—ছিঁড়ে দাও মুখচ্ছবি
আর স্ক্রিনে ভেসে ওঠে বিন্দু বিন্দু—দেহবল্লরী
তোমার পাশেই আমি কিংবা তুমি আমার পাশে
মাকড়সার মতো বিছিয়ে জাল গভীর ভালোবেসে!