চিঠি
আঙুল কেটে লাল চিঠি লিখেছি প্রতিমার কাছে
উত্তর আসতে দেরি হলে ডেকেছি হরতাল
. চিঠি লেখার দিন ছুটি…
বেজে ওঠো গানে—
খোল করতাল তবলা খমক বেহালা একতারা
বেজে ওঠো বাঁশি অন্ত্যজ তানে
দোতারা এস্রাজ বেদেনির বিন ডুগডুগি খঞ্জনি
সশব্দ বিদ্যুতে হেসে ওঠো মেঘ
জেগে ওঠো ভালোবাসা আনন্দ আবেগ।
পলাশ ফোটার দিন ফিরে এলে ভাবি
কতটা আগুন লেগে, কতটা উষ্ণতা পেয়ে
. সুগন্ধি পাহাড় বেয়ে
. নেমে যায় নদী।
মাঠে মাঠে শস্যবীজ বুনে
হেঁটে যাচ্ছি মহাকাল ধরে…
হৃদয় ধরছি বাজি জুয়ার টেবিলে
কামনার নীলপদ্ম ফুটে আছে ধ্যানে
অন্ধকার ধুয়ে যায় প্রতি সূর্যস্নানে
আমি এক অরূপ রাখাল
উর্বশীর চোখ থেকে স্বপ্ন হরণ করে
মধ্যরাতের উদ্যানে চিৎ হয়ে
আকাশের পৃষ্ঠায় চিঠি লিখি নিজের কাছেই…
উড়াল কবিতা
পাহাড়ের চূড়া থেকে উড়াল দিলাম…
মফস্বলের ছাদ ইচ্ছার চাঁদ ছুঁতে
. উড়ে উড়ে অবশেষে এখানে এলাম
যেখানে দাঁড়িয়ে দেখছি—পৃথিবীটা ফুটবল
কিক করেছিলেন কোনো মহান ফুটবলার…
ছুটে চলছি গোলপোস্টের দিকে
. একাকী কল্পভ্রমণ…
কিংবা আমার সাথে যে আমির বসবাস
যে আমাকে অনুসরণ করে প্রতিক্ষণ
অথবা আমিই যাকে খুঁজে যাচ্ছি রোজ
. ভালোবাসছি, কথা দিচ্ছি…
আমার আমিকে কিংবা আরো কেউ আছে
যে আমার প্রতীক্ষায়…
. অথবা নেই
অন্য কোথাও কোনো ঘুমের প্রহরে
জেগে উঠে কেঁদে ওঠে স্বপ্নের আবেশে
প্রতিদিন এইসব ভেবে ভেবে উড়ি
দাঁড়াই ছায়ার বিপরীতে
কে আমি!
কেন এই চিলেকোঠায় মধ্যরাতে আত্মসংলাপ
. অধরা দেবীর পায়ে সমর্পণ!
কী হবে নামের পাশে কবি কিংবা শিল্পী অভিধা
সুরের আবেশে যদি না-ই মেলে মুক্তির স্বাদ
. আত্মপ্রসাদ
ফিরিয়ে দেবো সব উড়বার সাধ…
ফিরে যাবো আটষট্টি হাজার গ্রামে
ঘামের বিন্দুগুলো একত্র করে
বাড়ির পেছনে দেবো পদ্ম পুকুর
বাড়ির চারপাশে সবুজ উদ্যান
পাখিরা গেয়ে উঠবে অতনুর গান
উঠানে খেলা করবে আত্মজ কবি…
মা লক্ষ্মী অনাহারে থাকবে না আর
সুখের বৈভবে ভরা ছোট সংসার।
শব্দ চাষ
দারুণ গ্রাম্যতায় পোয়াতি ধানগাছের সম্ভাবনা লিখি
ঝোপঝাড় থেকে ভেসে আসা ঝিঁঝিদের গান
লিখে রাখি গ্রীষ্মের পাকা আম গন্ধময়
. অলস বিকেল
. ধানের অক্ষরে লিখি প্রিয় অঘ্রান।
ছ্টো নদী রাংসার কলরোল লিখি
ভোরের সবুজে লিখি শিশিরের হাসি
হৃদয় খনন করে লাল কান্না লিখি
. ভূমিহীন চাষি।
একান্ত স্বপ্ন লিখি
. হৃদির পৃষ্ঠা ভরে লিখে রাখি প্রেম
কাম লিখি মোহ লিখি
. লিখে রাখি ভেতর বাহির
রোদেলা উঠান জুড়ে কবিতা ছড়িয়ে দিলে
শোনা যায় শালিকের কিচির মিচির!