মায়াবী আশ্রম
আমি সেই অসমাপ্ত গল্পের শেষ নিঃশ্বাস
বুকে যার নিরাময়হীন তৃষ্ণার অতৃপ্ত উত্তাপ
একরাশ শূন্যতা হাতে তোমার মায়াবী আশ্রমের
বন্ধ দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছি ঠায়
খোলো দ্বার মুদ্রিত চোখের পাতা
মুছে যাক বহু কাল ও ক্লান্তির অভিশাপ
ছুঁয়ে দাও জ্বরতপ্ত ঠোঁট, গতির প্রবাহ দাও যুগল নিঃশ্বাসে
আমিও আজ আরক্তিম গোলাপ হবো—
সুখ ও স্বপ্নের রূপকথা।
ঝাপসা হতে হতে একদিন ফেরারি হয়েছিল যে বসন্ত
ধূসর ক্যানভাস মুছে দাও তার বিমূর্ত দিন
দাও প্রেম, প্রেরণায় জ্বলন্ত সূর্যের অনুভব
কুমারী মাটির মন, মৃৎশিল্প হব
গড়ো যদি বালিকা পুতুল হে আদিম কুমার…
লাটিম জীবন
মায়া ও বিচ্ছেদঘোর বিস্ময়ে দিগন্তব্যাপী নিঃসঙ্গতা আজ
তরল আবেগে চোখ ভিজে ওঠা এই ক্ষণে
ওগো নদী! সঙ্গে নেবে? আমিও ভ্রমণ সঙ্গি হব—
যেভাবে পথের অন্তরালে হতে চাই আরেক দীর্ঘ পথ!
ভুলের বুননে গড়া দিন, যতবার ভাবি—
ব্যর্থতাগুলো পাশে সরিয়ে রেখে
বৃক্ষের নিকটে যাব, ছোঁব কিছু ছায়ারোদ
অমনি বৃক্ষ বলে, স্থির হও, শেকড় ছড়াও!
ভালোবাসাহীন বড় দীর্ঘ এ সময়, দায় আর দায়িত্বহীন
ইচ্ছেকে পূর্ণতা দেবে বলে একদিন যে হলো স্বপ্নের
সহচর—
যার আঙুলের স্পর্শে আজ পেছনে ফেরার দিন
সেও দেখি অন্য এক পৃথক মানুষ!
নেই বাধা, নেই বন্ধন, অর্ধ সত্যের মতো না দাস, না স্বাধীন
কেন তবে তার জন্য এই তরল আবেগের ঢেউ?
কথায় কথায় কেনই বা সর্বাঙ্গে তার জাগাতে চাই
প্রিয় ও পবিত্র মুহূর্তের মতো গতিময় আরেক পৃথিবী!
আত্মার আর্তি শোনে কোথায় সে সমুদ্র?
প্রতীক্ষারত বুকে যার স্বর্ণদ্বীপ, প্রেমের প্রবাহ
মুদ্রিত চোখের পাতা নিখুঁত নির্ভুল খুলে
দ্রোহের সবটুকু আগুন রেখে দিতে চাই তার
প্রেম ও প্রণয়ের সমবায়ে।
আজকাল নিজের ছায়াকেও প্রতারক প্রতিপক্ষ মনে হয়
তবু আশাবহুল ভাবনার বিন্যাসে
পুনরুত্থাপিত হতে হতে এক গোপন মৃত্যুতে মরে যাই;
অধিক কাতর হলে মন জড়তার আঙলে ঘুরে লাটিম জীবন…
স্বপ্নের ডাকঘর
কালের রোদ্দুরে লিখে চিঠি
বসে আছি স্বপ্নের ডাকঘরে
তুমি কি ভোরের ভৈরবী-
পাথর হৃদয় ছুঁয়ে ক্রমাগত
অন্তরা থেকে সঞ্চারিতে ছুটে চলো
স্তব্ধতার পাথর ঠোঁটে?
আমিতো কুড়াই বলিরেখা
ঝরাপাতার আহত পঙ্ক্তিগুলো
শব্দকে সাজাব বলে শিল্পের মতো স্বপ্ন দিয়ে
পুড়িয়ে স্বপ্নের নাড়া বয়সের উত্তাপে
সে আলোয় কুড়াই সবুজ শৈশব!
অনন্তের কোলে মিশে আছে সময়ের অনুগত চাঁদ
আদিম অরণ্য আজ এ নগর
পরকীয়া উষ্ণতার বেহিসেবি অনিয়ম
তুমি কোন্ আগুনের উষ্ণতা নেবে—
সহ্যহীন শীতের কুয়াশায়?