রোদের রুহানী
প্রতিটি আত্মার ভেতর লুকিয়ে থাকে জ্যোতির্ময় নদী।
প্রতিটি বিশ্বাসের জলে ভেসে যায় যে বিষাদ, তাকে
বলা হয় বেদনাপর্বের গল্প। মানুষ গল্প লেখে। মরুভূমি,
গল্প লেখে। মৃত্তিকার স্তরে স্তরে ঘুমিয়ে থাকে অজস্র
খনিজ সম্পদের গল্প।
পরমাত্মার স্পর্শ পেলেই পুনরায় জেগে উঠে রোদের
জীবাত্মা। ক্বলবের ভেতর সাধিত হয় যে নাম, অথবা
বলা যায় যে সুরে সুরে তাবৎ প্রাণীকূল করে সৃষ্টির
জিকির, তার মরমেও থাকে সজ্জিত ইশকের আগুন।
সেই আগুনের উষ্ণতা পেলেই চন্দ্র-সূর্য মানুষের পাশে
এসে দাঁড়ায়। বৃক্ষের পতাগুলো প্রতিটি রাতে প্রদক্ষিণ
করে প্রেমের আলমে আরওয়াহ।
প্রজা নয়, প্রজাপতি
দানা বেঁধে নতুন সাজে ঘর বদলাচ্ছে আগুন।
খুঁটি ও খড়মগুলো সাথে নিয়ে যে রাতের ভেতর
ডুবে যাচ্ছে চাঁদ; সেও জানে তার নিজস্ব গন্তব্য।
ভোর জাগছে। জাগছে অন্য কোনো দেশে। অন্য
কোনো মানুষ কররেখা দেখছে তার ছায়া-প্রেমিকার।
ভোর পেরিয়ে যে দুপুর স্পর্শ করছে, একটি রঙিন
প্রজাপতির শরীর; তার কোনো ঘর নেই।
প্রকৃতির কোনো ঘর থাকে না। থাকে না প্রাকৃতিক
জীবনেরও। প্রজা নয়, বরং প্রজাপতি হয়ে যে প্রাণ
দিগন্তে ওড়ে, কেবল সে’ই জানে রঙের ভেদ-প্রকার।
জানে প্রেমিক-প্রেমিকারাও। কারণ তারা পূর্ব জনমে
প্রজাপতি ছিল।
সুরবিক্রেতা শ্রাবণের জীবনী
তুমি ক্রমশ লাল হয়ে যাচ্ছ। আগুন-পিঁপড়ের ডানার মতো
মেলে ধরছো রাগের পাখনা। আমি রাগিনী ভালোবাসি
জেনে শোনাচ্ছ জল-মাদলের গান।
আমি এর আগেও পড়েছি সুরবিক্রেতা শ্রাবণের জীবনী।
যারা ঢেউ ভালোবেসে নিজেও ভেসে যেতে পারে-
পড়েছি তাদের সক্ষমতার ইতিহাস।
প্রেমিককে মাথা উঁচু করেই দাঁড়াতে হয়; জেনে
তাকিয়েছি আকাশের দিকে।জানতে চেয়েছি পাহাড়ের
বুকে লীন হওয়া নক্ষত্রের উচ্চতা।
তুমি ক্রমশ নীল হয়ে যাচ্ছ। দহন নেই, দংশন নেই
তবু কেন মাঝে মাঝে নদীগুলো এভাবে,
নীল হয়ে যায়!