অতপর
জন্ম থেকে জ্বলবো এমন কথা ছিল না
কথা ছিল বুকের দ্রুতগামী অশ্রুজল
পলকেই রক্তপাত ঘটাবে।
প্রতিজ্ঞা
তৃতীয় প্রার্থনায় শিলাবৃষ্টিময় চারিপাশ।
বোধের বিভ্রমে কেটে গেলো কতযুগ!
সেই তুমি এলে যাওয়ার বেলায়।
হুঁশিয়ারি সংকেতে আমি ব্যস্ত।
তবে কি জানো প্রিয়…
নীল পদ্ম আর শিউলির যোগাযোগ নেই
বিছিয়ে দিলাম আহ্লাদের আটকাহন
চর্মঘষা রূপের শেকলে বন্ধনহীন হোক
আমার অঞ্জলি।
গুচ্ছ কবিতা
১. তুমি আসোনি তাই,
. ফালতু ছোটলোক ছিলাম।
২. দেয়াল ছিল না,
. পেন্টিং টাঙানোর।
৩. উড়াল পাখির ঠোঁটে,
. গালমন্দ গেয়ে যাওয়া
নাক ফুল
অজস্র ফাটল বরাবর দোল খেলে
একটি ত্রিকোণ ফুটবল!
টুকটাক আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্টি
হওয়া রাত ক্রমাগত স্রোতের বিপক্ষে
দুর্দান্ত শটে ইনিংসের গোলবারের
ওপর বেশ কৌশলে হেঁটে যাচ্ছে!
শ্রাবণ বঙ্গাব্দ এখন রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মভাবনায়,
রূপান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত,
তবে নারীগণ বেশি রকমের ছিমছাম ইতিহাস।
ঐতিহ্য সংবলিত বুকলেটে,
পরিযায়ী শব্দ কবিতাকে ক্ষতবিক্ষত
করে মতিঝিল হয়ে শাপলা চত্বরে দাঁড়িয়ে
ট্রাফিক সিগন্যালে স্বপ্ন দেখে…
আঁচলের গিঁটে তখনো নাকফুল,
ফুলকপির মতো স্ববশবর্তিতা।
রেডিও স্টেশনের কাছে,
মতবিশ্বাসের ঊর্ধ্বে উঠে তৈলাক্ত আকাশ…
হারিয়ে গেছে
ভালোবাসার আগে সব ছিল,
আদর, সংসার ও হইচই বিকেল
আসছ জেনে তড়িঘড়ি করে চলে গেছে
সেই সব বসন্ত নিয়ে চিঠি লেখার কাল
কিছু বুঝে ওঠার আগে মস্তিষ্কের সেরি বামে ঢুকে
গেছে কাকতাড়ুয়ার দৃশ্যমান চিত্র।
সমালোচক ভেবে এড়িয়ে যেতে থাকে জীবন।
ছাড়তে হয়েছে প্রেমের আদর
প্রতীক্ষার প্রহরও!
গারদ
ভালোবাসার পর গোটা পৃথিবী বরবাদ হলো
ভুলে যেতে দেখি চমৎকার রোগমুক্ত আকাশ!
ভালোবাসাবাসি লিকুইডের মতো মুহূর্তে বুদ্বুদ উসকে দেয়
সেই চিরায়ত শৃঙ্খল যেখানে গল্পের রোদ নেই;
কার্তুযে মোড়ানো অন্ধকার
হেঁটে হেঁটে চিনলাম এই অসার অজ্ঞতা
বোকা বাক্সের ভেতরে ভীষণ মায়া।
একবারও বলিনি প্রেমিক হতে
একবারও বলিনি প্রেমের স্তুতি গাইতে
তবে কেন এই উদাসীনতা?
এই শিউলি-শরৎ উচ্ছিন্ন যাক গে, শুধু ফিরিয়ে দিও
সেই রাতের মেন্যু হইচই সময়…
রাত যতই দীর্ঘ হোক
এখন দিনকে ঠিক দিন বলতে পারি না
রাত ও আগের মতো নেই
নিঃশ্বাস ক্রমে ভারী হতে হতে গতিবেগ পাল্টায়,
আশ্চর্য ভঙ্গিতে ইউটার্ন নেই।
সকালগুলো নিয়ম মেনে আসে,
নিয়মের খেরোখাতায় বিষাদের পাণ্ডুলিপি,
ফড়িং হাতে ফিরে যায়
এইসব নিয়ম মেনে চলতে পারিনি বলেই
একে একে ছেড়ে গেছে সব।
শুধু তুমি আমাকে ছাড়তে চাওনি অথবা আমিও না।
রেড ওয়াইনের গ্লাসে গল্পের চুমুক রেখে
মেঠো পথে রৌদ্দুর কুড়িয়েছি
দুই হাত প্রসারিত করে মুঠো খুলে দিয়েছি,
কবিতার শব্দরা পায়রা ঠোঁটে তুলে নিয়েছে
খনিজ।
আমি তো প্রেমিকা হতে চেয়েছিলাম…
চোর
মার্জিনে শীত শীর্ষক ইনস্টলেশন দেখে
ছেলেটি তালি হবে ব’লে চিৎকার দিলো,
পাথরময় জলরাশীর সৃষ্টিতে
সহায়ক নয় ভেবে
কারচুপি দিয়ে ঢেকে রাখে অজস্র সুর,
উজানভাটি জোছনা।
একটি নদী সপাটে ঢুকে যায় এলাচ বনে,
জানালার পর্দায় উপস্থিত ছিলেন মহামান্য,
নদী বাক নিতে গিয়ে ভুলে যায় উৎপত্তি!
হেঁটে আসে নিয়তি,
ততক্ষণে হন্তদন্ত হয়ে শুষে নেয় গ্রীবা,
আয়ু ফুলে সুই ফোঁটায়…..
নদী ফিরে আসে
আঙুলে সংসার, বাজারের ফর্দ
স্কুলের ব্যাগ, চুরি হওয়া বিকেল ইত্যাদি।
বদল হচ্ছিল
রাতের সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে ভোর,
গ্রামে গ্রামে উৎসব বিকেলে বৃষ্টি ঝরে
তুমি পাঠ বন্ধ নিমগ্ন হয়ে
একটা ঝিনুক-শিকারির মতো হেঁটে যাবে
কোনো একটি কবিতায়।
পায়রাগুলো অক্ষর আকৃতিতে স্ফিয়ারটি
উদ্ধার করতে পারিনি বলেই
ডাকে…বকমকাঠ।
বকমুখ জীবনে একটু আনন্দ হয়
আওয়াজ খুলে বসতে দিয়ে একজন
কবি ও গল্পকার বেহিসাবি।
গোলাপি জিভে এখন তৃণমূল কংগ্রেস,
রাজ্যসভার নিমজ্জিত আকাশ নিয়ে
কথা বলতে পারবো না বলে
কথার মুদ্রায় স্কুল আসে।
আসে অমোঘ বিষণ্নতা, দীর্ঘশ্বাস ফেলে
ভাবছি দেদারসে রসিক হবো।
দীঘল কাল
দুম করে শব্দরা এলেই বলতে পারি না তুমি ফিরে যাও
শুধু জানি শব্দরা ফেরারি পাখির মতো,
সে আসবেই নতুন রূপে তুমল বিষাদে,
এই রূপান্তরে বারবার হেরে যাওয়া
অথবা নতুন করে নিজেকে ফিরে পাওয়া!
আমি তো নৈঃশব্দ্যের দীর্ঘ উপাখ্যান ভেঙে তৈরি করি
সেইসব দীঘল সবুজ যেখানে ফুরিয়ে যাওয়া আয়ু
আরও কিছু দিন বেঁচে থাকে
জয়তু হে…