ম্যাজিক টাইম
দেয়াশলাই বাক্স খুলেছি—ভেতর থেকে
উড়ে গেল পাখি
গতরাতে ঝরে পড়া ফুলগুলো গাছে উঠে
পা দোলাচ্ছে
কী হচ্ছে এসব!
সন্ধ্যা ও কুয়াশার ভেতর নির্জন রাস্তায় সাইকেল আরোহী
তাঁর সিগারেটের আগুন থেকে আমার সিগারেট
জ্বলিয়ে নিয়েছি
তারপর জানতে চেয়েছি—কী হচ্ছে এসব!
কোনো উত্তর না করে লোকটি সাইকেল চালিয়ে
চাঁদে উঠে গেল
কালো কুকুর
সে কেবল জুতো জোড়া পাহারা দেয়
প্রকাণ্ড গাছের নিচে পাতা ঝরে। কামিনী। টগর। বকুল…
আড়ালে সবুজ বাংলো- যে পর্যন্ত এখনো আসিনি
এখনো রাস্তায় আছি
জুতো জোড়া আমার পায়ের মাপে নয়!
প্রচণ্ড প্রতিবাদে কালো কুকুর ঘেউ ঘেউ করে
টাইম মেশিন
কফিনের মতো এক টাইম মেশিন, ঠিক কফিনের মতো নয়
জীবনের সমস্ত রাগ রিভলভারের মতো কোমরে ঝুলানো
ঠিক রিভলভারের মতো নয়
বিকেলে হেমন্তের রোদ নামছে বাড়ির উঠোনে
পাখি ডাকছে ‘বউ কথা কও’
ঠিক ‘বউ কথা কও’ নয় সুখে উঠে বসি টাইম মেশিনে
তেতাল্লিশ বছর পিছনে… আমি-ই এক আট বছর বয়সি বালক
পালিয়ে এলাম যাকে মুহূর্তেই গুলি করে
ওর লাশ হেমন্তের রোদ মেখে বাড়ির উঠোনে পড়ে আছে
ঠিক বাড়ির উঠোনে নয়
সম্পূর্ণ সত্য
আমি যে স্কুলে পড়াই, জিনিয়া ম্যাডাম সেই স্কুলের
সভাপতি
বাগানের পাশ দিয়ে জিনিয়া ম্যাডামকে হেঁটে আসতে দেখে
আমার তিন বছর বয়সের ছেলে বলে
—বাবা, দেখো
ওই যায় তোমাদের ইশকুলের প্রজাপতি
বাঘিনী
মাদ্রী, আমাকে বললো—‘এই পথে এসো বাবু’
দেখছি—এ পথ কোথায়? ঘাসের জঙ্গল
মেয়েটি এগিয়ে যাচ্ছে ঘাসবন চিরে
ছোট্ট মুণ্ডাপাড়া। আর ওই ঘাসবনের ওপারে ইশারার অন্ধকার
ভারি নিতম্ব পেঁচিয়ে পরেছে গ্রামীণ-চেক শাড়ি
খাটো ঝুলের ব্লাউজ। কালো পিঠের ওপরে রোদ চকচক করা
এক বাঘিনী হেঁটে যাচ্ছে ঘাসবনের ভিতরে
আমার চোখ থেকে এক চিতাবাঘ
লাফিয়ে নেমে হেঁটে যেতে লাগলো মেয়েটির পিছুপিছু
মাসুদার রহমান ‘কবিতা সংগ্রহ’
প্রকাশক: বেহুলাবাংলা
প্রকাশকাল: বাংলা একাডেমি অমর একুশেগ্রন্থমেলা ২০২৫
স্টল নাম্বার: ২৩৪- ২৩৫