মৌলিক কাব্য-১৯৭১
কবির হাতে ট্রিগার থাকলে সুখ জ্বলে অনির্বাণ
মেঘের গালিচায় ওড়ে মুক্তিসোপান।
ঠা ঠা উঠান, ভাতশালিক কথা কয়; গুলির শব্দও ব্যঞ্জনাময়।
বিশুদ্ধ কবি মাটি চিরে কবিতা ফলায়
চিতাচোখী কবিরাই শুদ্ধতম কাব্য আওড়ায়
আলোর গেরিলারা থ্রি-নট-থ্রি দিয়ে অন্ধকারে ধাতব দৈত্য তাড়ায়
বুকে মাইন বাঁধে ডলফিন, মুখোমুখি সাবমেরিন;
দশ নম্বর সেক্টর লাল হয়ে যায়।
অকবিরা পিছু হটে, কাব্যের জয় হয়; বজ্রকণ্ঠে রণে: জয় বাংলা।
কিছু কিছু নদীকে কবিতা বুঝতে নেই, বয়ে যায় অবিরাম
সবকিছু আঁকে না কাব্য, যেন বৃক্ষপুরাণ!
চোখের আয়নায় কেউ কেউ মনের কুয়াশা নামায়
সব কবিতা সহজবোধ্য নয়
যে তটে গোধূলি নামে, সূর্য ডোবে, অস্ত যায়,
যে প্রসূনবনে প্রেম লুকানো দায়,
তাকে নিয়ে কবিতা লেখা যায় না, কিছু কাব্য বিহঙ্গ হতে চায়।
মৌলিক কাব্য লেখা হয়ে গেছে: উনিশশো একাত্তর
সব কবিকে এই কবিতা পড়তে হয়, নচেৎ সে কোনো কবিই নয়
কেউ কেউ উপমার অধিক, তারা স্বয়ং কাব্য হয়|
সায়রে শুক্লপক্ষ
মেটে না সায়ন্তন চন্দ্রক্ষুধা।
বেড়েই চলে আকুলিবিকুলি হৃদয়ের রূপকথা।
গোলপাতা বনে কলকল্ উপচে ওঠে জল
মহেশখালী শ্যুটিং ব্রিজ, মৎস্যঘাট
সাগরবাতায়নজুড়ে হিম-সমীরণ
তেলেপি তেলেপি নাচে জোছনার আবাহন।
আকাশজালে উঁকি দেয় বিমুগ্ধ পর্যটক।
বাতাসে বাজে
বৈশাখীর ক্রমবর্ধমান বিপদ সংকেত।
কেওড়াবনে পাতার শনশন, আর
জলধিগর্জন উপেক্ষা করে হিয়ার সাঁতারে ভাসে মন
স্রোত, থরোথরো মখমল।
মায়ামাখা মাধুরী জোছনা পোয়াতিসমুদ্দুর
নিশিডাক আর
অম্বরে উড়ে যায় গৃহত্যাগী কাক
নিলয় অলিন্দে ধমনীতে ধকধক, উদাসী দহন
আঁখির সুধায় খুঁজি সুখের নিমীলন
জ্বিভজুড়ে খলখলায় একেকটা হাফ-কেজি হরতন
এখনি ট্রলার ভিড়বে
লাফাতে থাকা টাটকা রূপচাঁদার অপেক্ষা ফুরাবে
প্যালপ্যেলে লইট্যার ঝাঁকে ডুবে যাবে হাত
এ ডিজিটাল আইল্যান্ড যেনো এক রূপলাগা ফাঁদ।
হৃদয়ের গোরখোদক
নিত্য বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়ার মাঝামাঝি
আরেকটা জীবন থাকে—যাকে ঝুলে থাকা বলে
দামি হাসপাতালের প্রাণ-পরিচর্যাকেন্দ্রগুলোতে
মরার আগেও অনেকে সু-চিকন আশায় ঝোলে
কিছু লাশে গন্ধ উঠলেও বলা হয় ঝুলে আছে
কতেক মরদেহ নগদ নারায়ণের সৌরভে ভাসে
হাসপাতালওয়ালা ফিরিঙ্গিরা সেটা ভালো বোঝে
আজকালকার প্রেমগুলো সব প্রফুল্ল এন-টু-ও
হৃদয়নিকুঞ্জে ভরপুর ভালোবাসাহীন বায়ুপ্রকোষ্ঠ
দাম্পত্য জীবনগুলো বাদুরঝোলা হয় প্রতিনিয়ত
প্রতিটা পিয়াসী মন একেকটা হাসপাতাল যেন
প্রতিটা মুঠোফোন একেকটা নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র!