মা-সিরিজ ২০
কোনো বিষধর সাপ ফণা তুলে দাঁড়ালে
প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে যায়।
অথচ, সাপদের কোনো প্রশ্নের উত্তর আজও মানুষের অজানা
তাই মানুষের সঙ্গে সাপদের এত আড়ি।
আমার মা বলেন—
কোনো কোনো মানুষ সাপেরও অধিক
তাদের এক ছোবলে হাজার মানুষ মরে।
বস্তুত সাপদের কাছে মানুষের শেখা উচিত
এই আভিশাপ থেকে মানুষ কবে মুক্তি পাবে।
মা-সিরিজ ২১
হঠাৎ আমার মায়ের অসুস্থতার খবর পেলাম
ঠিক তখনই হাতঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখি
ঘড়ির কাটা উল্টা দিকে ঘুরছে।
এভাবে আমি ঘড়ির কাটার সাথে উল্টা দিকে ঘুরতে ঘুরতে
শৈশবে ফিরে এলাম।
এমনি করে ফিরে পেলাম
নগ্ন হয়ে মার্বেল খেলার দিন।
মা-সিরিজ ২২
আমার মায়ের চোখে একটি রেলস্টেশন ঘুমিয়ে থাকে
মা। চোখ খুলে যে দিকে তাকায়- রেলগাড়িগুলো সে দিকে ধাবিত হয়
আবার সন্ধ্যা হলে পাখির মতো মায়ের চোক্ষুনীড়ে রেলগাড়িগুলো ফিরে আসে।
মা যখন কাঁদে— তখন রেলগাড়িগুলো বন্যায় ডুবে যায়।
গতবছরতো মা আমার বর্ষার আকাশ হলো
আর রেলগাড়িগুলো অবিরত ডুবে যেতে লাগল
অথচ, আমি মায়ের একমাত্র হাবাগোবা রেলগাড়ি।
মা-সিরিজ ২৩
কোনো প্রশ্ন না করইে
আমার স্মৃতি হেঁটে যাচ্ছে—মায়ের আঁচল ছায়ায়।
আমার পাশে হাজারও মানুষ
তবুও মা। আমি যে তোমারে ছাড়া কত নিঃসঙ্গ কতটা অসহায়
তা ওরা কেউ জানে না।
প্রিয়তমা। তুমি আমায় একখিলি আড়াল দাও
আমি আমার মায়ের ছায়ায় লুকাবো।
তোমার চিবুকের নিচে আমি এক ক্লান্ত ট্রেন
আমাকে গ্রামে ফিরে যাবার গ্রিন সিগনাল দাও।
আমার মায়ের ভালোবাসার সবটুকু সঞ্চয় শেষ করে ফেলেছি
আমাকে আবার মায়ের কাছে যেতে দাও
কথা দিলাম। মায়ের ভালোবাসা হৃদয়ে রিচার্জ করে
ফিরে আসব তোমার দ্বারে।
মা-সিরিজ ২৪
ছেলেবেলায় প্রেসার-কুকারের বাঁশি শুনে ক্ষুধা পেত
হাত ধুয়েই বসে যেতাম কাঠের পিঁড়িতে।
মা স্টিলের থালা ভরে নিয়ে আসতে মাংসভাত
খাওয়া শেষে না হতেই পেটের ভেতর শুরু হতো বজ্রপাত
হাত না ধুয়েই এক দৌড়ে মন্দিরে বসে—ত্যাগের প্রার্থনায় রত হতাম
মন্দির থেকে ফিরে এলে মা আমায় জল দিয়ে পবিত্র করতেন।
আথচ, আজ সেই প্রেসার-কুকার আমার মস্তিষ্কের ভেতর রান্না করে
বাঁশি বাজাতে বাজাতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে
হায় প্রেসার-কুকার তুমি আমার মস্তিষ্ক হয়ে গেলে।