লতা-পাতা সুন্দরী
রোদ এসে বনে ঝাঁপিয়ে পড়ল বিষ্টির সঙ্গে।
ছায়াছবির মজজুবি পর্দার জোরালো আলোর
ঝলকানিতে নুরানি চেহারার নর-নারীর খোদাবি
জিকির। রোদের সোনা গলায় হৃদের জলে টুব
টুব ঝমঝম বিষ্টির খই-ভুট্টা ফুটছে। ‘মন আর
পিছু ফিরছে না’।
এক ঝাঁক শর্মিন্দা ফুল নিয়ে ঢালা সাজিয়ে
ঢেঁড়স ফুল ফুটে আছে নিঃসঙ্গ, একা-একা
বিবাগী ভ্রমর মধু খুঁজছে, পুচ্ছে চকচকে-
কালোর কি বাহার! ঝিলিমিলি শাড়ির অন্দরে
পাহাড়ি গায়েবি জ্বর!
মায়াপাশ ফিরতে ব্যাকুল সুগন্ধি গামারি ফুলের
হাওয়ায় তবলার সঙ্গত টোকায় দেবরঞ্জনী রাগ।
চাঁন্দের গালে কাটা দাগ চোখে পড়ে না এই ভিখিরির
জেনে নিলাম, অরণ্য সুন্দর, অরণ্যরা সুন্দর।
বসন্তে, কোকিলা বিবির ওরশ শরীফ
কোকিলাকে মেরে গুঁজেছিল ঝাড়ে, যোগিনীর
রুহ-গোলাপ পাপড়ির রওজা। কৃষ্ণচূড়া ফুল
মিনমিনে শয়তান; নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে পুড়লো
রক্তমাখা পালক। ‘হরি হরি’ বোলে আসমান
ছেঁদে শিলাবিষ্টি, ঠ্যাঁডারে দিশকূল হারিয়ে-
বাঁশঝাঁড়ে চিৎ হয়ে পড়েছিল ধলা বগ। গুদ্দার
রঙ শিককাবাবের মতো এভাবে।
ফুলে ফুলে বন ঝালওয়ার হলে, কুহুকুহু ডাকে
পথচারীর ঈবলিশি ডাকে, বুঝি এই কোকিলা
ফিরে এসেছে; বর্ষাকাতর বুকে চিক্কার দেয়:
ও কোকিল তোর বাসা নেই কেন ডাকিস রে! –