ক্ষয়িষ্ণুতা
কোনো কিছুর শুরুর সময়গুলো খুব চকচকে
বীজ থেকে চারা গজানোর পর মনে হয় যেন ওরা
দুপুরের ঘুম পালিয়ে
মাঠ পাড়ানো শিশুদের মতো আনন্দে হইচই করছে,
পরীক্ষার খাতার প্রথম পৃষ্ঠাটা এতটাই পরিচ্ছন্ন থাকে
যেন মঙ্গলবারের গোবর লেপা উঠোন,
বন্যার পানি যখন বেড়ে গিয়ে পথ ঘাট উপচে পড়ে
মুক্তোদানার সে ঢেউয়ে নাইতে কার না মন উছলে ওঠে!
মেজবানির প্রথম বৈঠকের পরিপাটিতে
উদর যেন তৃপ্ত হয় দ্বিগুণ স্বাদে,
প্রেমের শুরুতে আতশবাজির দ্যুতিতে
চায়ের কেতলির বলকে ওঠা দুধের মতো
প্রাণ আনচান করে দুপাশেই,
তাতে কী!
শুরুর মৃত্যু অবধারিত,
পাথর কিংবা জীবন, ক্ষয় তার হবেই।
প্রতিদান
এক বিন্দু যত্ন দাও
পাবে নিমগ্ন চাওয়ায় বিচ্ছুরিত জ্বোনাক জ্বলা সুখ
এক মুষ্টি ভরসা দাও
পাবে শ্রাবণ দিনের অঝর ধারার প্রশান্তি
আমায় প্রথম বেলার চায়ের
শেষ চুমুকটা দাও
পাবে অক্লান্ত পরিশ্রমের চনমনা বাতাসের নিশ্চিন্ত ছোঁয়া
ঘুমের আগে আমায় একটা পলক দাও
পাবে হাজার রাতের বিষাদ মোছার তৃপ্তি লাগা চুম্বন
আমায়, তোমার সবটা নয়
তপ্ত বুকের ওই একখণ্ড জমি দাও
পাবে আকাশজুড়ে মেঘবালিকার
নির্ভাবনায় মোড়া রাশি রাশি ভালোবাসা।
মানিয়ে চলার নাম অন্য কিছু
বিষণ্নতায় আঁকিবুঁকি আবছায়া ঘরে
আলোর হাতছানিতে মন কেমন করে
নিভু নিভু যন্ত্রণা গুমরাতে থাকে
মরীচিকা বাসা বাঁধে দেয়ালের ফাঁকে
গলা টিপে ধরার আগে ভয় করে তাড়া
জলখাবার হয়ে গেলে পিছু হটা সাড়া
মাঝে মাঝে মুড সুইং, মানে কিছু আছে!
ভুলগুলোই ফুল হয় ভাবা সে তো মিছে
গল্পেরা টান বাড়ায় স্বপ্নেরা দূরে সরায়
কাব্যরা মেরে ফেলে আষ্কারা কাছে আসায়
মায়া সব কায়া হয়ে রাতগুলো কেড়ে নেয়
ব্যথা সব ভুলে গিয়ে লাজগুলো দিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: গণরুচি বনাম সাহিত্যরুচি ॥ মোহাম্মদ নূরুল হক