বুদ্বুদ
যখন তোমাকে মা ভাবি—তুমি হয়ে যাও প্রেমিকা। আর যখন প্রেমিকা ভাবি তখন হও মা। তোমার স্তনে আমার নখের উষ্ণতা ঘুম পরাতো তোমায়। তুমি স্বপ্নে কোনো রাজকুমার—হয়তো নগন্য সিনেমার টিকেট ব্ল্যাকার খুঁজে ঘুম ভেঙে দিতে আমার। তখন মায়ের প্রতি কোনো আগ্রহবোধ করতাম না। পাশ ফিরে—স্বাদের বুদ্বুদ তুলে আবার তোমার কুয়োয় শিশির ছড়াতাম।
একরাতে তোমার ইচ্ছে হলো—আমার মা হবে। আমরা প্রস্তুত হতে থাকলাম দীর্ঘ আলিঙ্গনের জন্য। শেষ অক্ষরে তোমার যমুনায় বিসর্জন দেওয়া আমাকে তুমি আর খুঁজে পেলে না। আমি তোমার ঠোঁটে ভেসে উঠলাম। তখন সুবহে-সাদিক। কোথাও কোনো পতিতার কান্না জেগে নেই। সে অদ্ভুত বিদায়ী! সেখানে আমরা নতুন করে আবিষ্কৃত হলাম। তুমি ধাঁধাঁয় পড়ে চিৎকার করে বললে, তুমি আমার সন্তান; তোমাকে আমি এই স্তন পান করিয়েছি। তুমি দেখো আমার যোনিতে এখনো তোমার জন্মক্ষত।
তারপর যখন দেখলে—আমি অবিকল জন্মেছি আবার। এবার আমার সাথে তোমার কেবল সহোদরের পরিচয়। তখন আমার মনে হলো আমি ও মা—মা ও তুমি কেউ আলাদা না। প্রত্যেকেই বৃন্তহারা এক একটা ওষধি। গভীর আলিঙ্গনের আড়ালে হয়তো আমিই আমাকে জন্ম দিচ্ছিলাম বারবার!
উৎসব!
কান্না এলে তোমার মুখ আসে। কৈশোরের পিনপতন একজামের কথা মনে পড়ে। আন্দোলিত ফসলের ক্ষরণ ও খৈলানের বিকেল—পরাভুত আওয়াজ আসে। পড়শি খড়ের গাধায় নিম্নমুখি হয়ে থাকা উড়ালকাল হারিয়ে শূন্যে—তোমার দেওয়া বাবুইটা নিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে কবর ভেবে মরে যাই। তৃতীয় মৃত্যু ও কবরের মধ্যবর্তী ফাগুনে তোমার কোমড় বাঁকানো হাসি এগিয়ে আসে।
বসে আছি। ঈর্ষার কাফনে। তদ্রুপ তুরুপের মধ্যে বিক্ষিপ্ত স্তন নিয়ে কাছে এসো। দেখো আমি ক্লান্ত আয়নার মানুষ হয়ে গেছি। সামনে-পিছনে কোনো ইতিহাস নেই। মনে হয় তোমার ঠোঁটের সলতে ছিঁড়ে আবার জ্বলে উঠি। বৃদ্ধ খড়ের আকিকায় পুড়িয়ে দিই ছুটির অপেক্ষা।
রুশ প্লেনের তাপে কাঁপছি এখন—তেমার স্তন বৃন্তে কে কাঁপছে? আমাকেও কাঁপাচ্ছে দুনিয়া তোরন। তোমার তৃষ্ণার রঙিলা ব্রা’য় হাত রেখে দুনিয়া পঠিত হবে। ধর্মতলার বিষে বিষক্ষয় হবে কার্তুজের।
এবং তুমি খুলে দাও ঈশ্বরের মৃৎদপ্তর। আমি চক্ষু ভর্তুকিতে বিন্যাসিত হবো। তোমাকে নিসর্গ চূড়ায় স্থাপন করবো কান্নার মুখ। ছুঁই ছুঁই জীবন রাক্ষসের ছই থেকে খসে গেছে; যাবে আরো বহু নগর—
নাসা’র পরিভ্রমণে তর্কাতিত বিষণ্নতা তৈরি করো তুমি। আমি অন্ধ রুমালে ইসরাইল নিয়ে বিন্যস্ত হয়ে যাবো। ইস্্—বর্ষা মাটিতেই নামে! আমি বরং অর্জুনের দাঁত চুষে ইব্রাহিমের উৎসবে অর্পিত হই—
দৌড়
ধারণাতীত তোমার গ্রীবা! এত সতেজ শ্বাস বিলাচ্ছো—আমাকেও দাও এক লহমা; অন্ধকার ঢেকে রাখি। মুখের মধু; গচ্ছিত পালাকারদের বলে দিই—এ মহল্লায় মৌমাছি এলে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবেন।
দাঁড়াও। হুম, পিছনটা আরেকটু বাঁকা করে। দেখছি সুডৌল নাভি— বিপরীত স্তম্ভে থিতাচ্ছে জীবন। ব্যহত হতে হতে ঝিমিয়ে পড়েছিলাম। —উস্কে দেয়া বয়েজ ইশকুল তোমার হাঁটুর উপরে এখন। ক্রমেই খসে পড়ছে ছায়ার আবরণ। আবৃত গ্রাম উন্মোচন হবে বলে থির তাকিয়ে আছি; পৌষের ডালে। আরেকটু কোনাকুনি হও, বিশদ অভ্যাসে পা’টা ছড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও। সুইজ ব্যাংকের তক্ষক যেমন পানিবাহিত রোগ ফেরি করে দুনিয়ায়। মুখে তেমন হাসি রাখো। শ্যাম্পুর পেটে যেভাবে মেলে রাখো দাঁতের জিওগ্র্যাফি। আর কন্ডমের শাঁখে ঢিলেঢালাও হতে পারো—কলাইয়ের চুল ধরে যেমন বিড়াল হেঁটে যায় নিশ্চুপ।
পা কাঁপছে—কান্নাহত যৌনাঙ্গে উঁকি দিচ্ছে ফিলিস্তিন। সোমালিয়ার অসুখ তাকে কবেই বা স্পর্শ করেছে বলো; পুড়ছি-ই তো খই। এটুকু দূরত্ব রাখো।
বারুদের ঘ্রাণ দূর থেকে নিতে ভালো লাগে। খুব কাতর হয়ে আছো দেখছি। আরেকটু নিচু হও—ডানের দিকে আরেকটু ঘোরো। দেখো, হিস হিস করে একদল পিঁপড়া তোমার দু’পায়ের গন্তবে দৌড়াচ্ছে। দাঁড়াও। আরেকটু দাঁড়াও। আমিও খুলে ফেলছি সমস্ত আবরণ। আদ্র সলতের শোক নিয়ে এগিয়ে আসছি দ্রুত।