দেবতামুখো আগুন
একটা জটিল দেবতামুখো আগুন লকলক করে উঠছে, নামছে, অনায়াসে চিবিয়ে ছুঁড়ে ফেলছে নরম তুলতুলে মাথা
আমি কেবল রাতের বাসি ভাত গোগ্রাসে গিলতে পারছি না।
রাতে সাদাকালো আলতো একটা ছোঁয়ায় ফ্রিজের ডানা খুলে নিয়ে গিলে নিতে পারছি না শীতের জন্য সঞ্চিত খাবার—
নিমেষে একটা ওয়েবসাইট খুলে একুশ সেকেন্ডে হাত দুটো চটচটে ব্যর্থ পুরুষের উল্লাসে ভিজিয়ে নিতে পারছি না—
ওই আগুনে ছ্যাঁক লেগে পুড়ে যাচ্ছে আমার আগত শিশুরা।
আমি দু-একটা বিলাসী চেনা মোড়ে দাঁড়িয়ে জড়িয়ে ধরতে পারছি না জীবনকে
করতে পারছি না একটি দীর্ঘ, একটা খুব উত্তেজক লিপ-লক-
একটি অতি মারাত্মক নিরাপত্তাকে কেন্দ্র করে আমি নগ্ন হওয়ার চেষ্টা করছি ফেসবুকে
একেকটা ভদ্র মানুষের মতো পরিকল্পিত হওয়ার দুর্নিবার চুতিয়াগিরি করছি, মাঝে মাঝে সুড়ুৎ করে চুষে নিচ্ছি রাগ—
কলকাতার সমস্ত গাড়িঘোড়া, পোশাক, অট্টালিকা আমাকে দেখে ফিসফিস করে।
আমি জানি, আমার মাথার মধ্যে একাধিক খুন চেপে রেখে আমার লিবিডো উদার হয়ে গাইবে—এই রাত তোমার আমার—
চমৎকার একটা ফ্রেমবন্দি সামাজিকতা ছেড়ে, আমি বেশ্যাদের কাছে যাব, গান শোনাব, চুমু আর চন্দনে মাখব আলখাল্লা
আমি হিজড়েদের কাছে যাব, বাজি পোড়াবো, তালি মেরে গাইব—আফগান জালেবি অথবা রবি ঠাকুরের কোনো স্বেচ্ছাচারী গান
একটা জটিল দেবতামুখো আগুন লকলক করে উঠছে, তা আমাকে রাত্রিবেলা শুয়োরের মতো কাঁদতে দিচ্ছে না—
বিশ্বাস
বছরে একেকটা দিনদিন আমি চমৎকার অন্ধ হয়ে নিজস্ব সহজ আকার খুঁজিনি
জেরুজালেমের ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ভাবি—আগুনে চুমুর সাইড এফেক্টস…
কাটা কাটা চেনামুখ সারিতে আচমকা খুঁজে নি পুরোনো শহরের হাড় পাঁজর
পুজো শেষে দেবালয়ে পড়ে থাকে সজ্জিত ঠাকুরের পচাগলা লাশ।
২.
চাদরের পিঠে লেখা ছেলেমানুষ শব্দেরা তোর তিল পিঠে বুকে লেগে হবে অর্থ।
কচি খুকির মতো পুরনো জীবন তোর দশ কিলো ভারী হয়ে যাবে আচ্ছন্ন আদরে।
স্যাটেলাইট মন চমৎকার ফ্লাইং চুমু ছুড়ে ফেললে কোনো বেনামি অ্যান্টেনাতে—
আমাদের ভালো থাকা ঢেকুর তুলে বুকে বুক ঘষে, চোখে চোখে আদিম বর্ণের নতুন এক উচ্চারণ—
আরেকবার বিলি কেটে দিবি? তোর ওই বোকা আঙুলের ফাঁকে বয়ে যাবে আমার ধারালো জীবন।
তোর নাভির তলায় জল, ভোরের প্রথম ট্রেনের শব্দের ধারণপাত্রে রেখে আমি ডানা মেলেছি শিকারির সন্ধানে, অথবা শিকার…
হোপ
মিথ্যে সবকিছু যা কিছু ছুঁয়েছি এই বিষের ঠোঁট দিয়ে, ফিরিয়ে নিলাম। ফিরিয়ে নিলাম বসতি, চোখ পোড়া আলো, বন্দুকের নলের গোঁড়ায় বেঁচে থাকা মনের সমস্ত পোষ্য। আমি জানি যা কিছু আমি পেরেছি তাই শ্রেষ্ঠ প্রতিবাদ। ফিরিয়ে নিলাম অস্ত্রের মুখের তীক্ষ্ণ হীরের চমকপ্রদ আঘাত। লিখতে আজকাল খুব কষ্ট হয়, প্রবলভাবে ডুবে যাওয়ার মতো শ্বাসকষ্ট আমাকে অপরাধী করে যায়। কাল যা লিখেছি, ক্রমাগত বদলে যায় তার স্থিরতার আকার। ফিরিয়ে নিলাম সমস্ত লড়াই, সেসমস্ত ভালো দিন, যেদিন বাইরের পুড়ে যাওয়া প্রিথিবি থেকে চোখ ফিরিয়ে আমি ব্যক্তিগত মগ্নতায় মজেছি। জানি উদাসীন শব্দেরা হিংস্র কুমিরের দাঁতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে কবরে আশ্রয় খুঁজে নেবে। আমাকে রাস্তায় খুঁজে নিতে হবে দামি মোজায় সংরক্ষিত পায়ের কোনো শিশু, অথবা তার ভাবি মা। ফিরিয়ে নিলাম আগুন, আগুন পাখির গ্রীবায় ঢেলে দিলাম উন্নত শুক্রাণু। দধীচির হাড় বেচে আমি কিনে নেব পুরনো গিটার।