সাধনার শত্রু থাকে
সাধনার শত্রু থাকে চারিদিকে, শ্বাপদের মতো
তারপরও এ নগরে, যে তুমি সাজাও সন্ন্যাস
হয়ে যাও অবনত, আর এই মাটি-ক্রীতদাস
বাসন্তী বৈভবে গাও-আরাধনা কর অবিরত।
শুধুই তোমাকে খুঁজি পাতা আর পৃষ্ঠার প্রকারে
একাধিক ধ্যানে রেখে জীবনের অধিক প্রণয়
তবে কী আয়ুই শ্রেষ্ঠ; ঝড়চেরা বিপুল প্রলয়
কাছে এলে আগুনেরা বশ্য হয় মায়ার মকরে।
রাশি আর রশ্মিদের আস্তানায় প্রথম যেদিন
এতটুকু ঠাঁই খুঁজে অবিকল বৈরাগীর বেশে
খুঁজেছি আশ্রয় আমি, পারদের মৌন তপ্তদেশে
তুমিই সাক্ষী ছিলে, জলগ্রহে ভেসে থাকা মীন।
তপস্যার তরুগুলো সরু হয়, লিখে রেখে দিও
প্রকৃতির অন্য নাম মিশে যাওয়া-বিনয়ে লিখিও।
আমাকেও নিয়ে যেও
আমাকেও নিয়ে যেও তোমাদের প্রত্নের প্রাসাদে
যেখানে আদিম ফুলে লেগে আছে পূর্ণিমার ঘ্রাণ
এবং চন্দ্রের ছায়া নুয়ে আছে লৌকিক প্রবাদে
মানুষ জাগবে বলে জেগে আছে গ্রহের বাগান।
কিছু আলো জমা থাক, কিছু নদী বয়ে যাক ধীরে
কিছু পাখি করে যাক ডানাময় আকাশ বন্দনা
কিছু পুণ্য হাতে হাতে, পৃথিবীতে আসুক না ফিরে
কিছু পুষ্প করুক না মানুষের ভাগ্য গণনা।
অংকতে কাঁচা ছিলাম আর ওই আদি-ইতিহাসে
ভূগোলকে ভালোবেসে রচেছিলাম যে সৌরালোক
রংগুলো জমা রেখে আগামীর তৃণে কিংবা ঘাসে
প্রজন্মের জন্যে এই সূর্য’টা; বিশুদ্ধ থাকুক,
জানালাটা খুলে দিয়ে যদি এসে দাঁড়াও বা’পাশে
তবেই তো খুলে যাবে চৈতন্যের ধ্যানমগ্ন চোখ।
বিশেষণ কিছু নেই
বিশেষণ কিছু নেই, বিশেষ্যে চক্ষু রেখে স্থির
যদি এসে ডাক দাও, সাড়া দেবো প্রতিজ্ঞা অসীম
সাতরঙে এঁকে যাবো সমুদ্রে; প্রথম আবীর
ভ্রূণের গহীনে ডুবে, হোক না সে চালতা কী নিম।
প্রার্থনার প্রতিভোরে যে শিশির মায়াময় মাঠে
মানুষের জন্য প্রেম, বিনম্রে করে বিতরণ
কতজন মনে রাখে, কোন রেখা ঝড়ের ললাটে
এঁকে দিয়ে বিজলীও সারে এই নবীন ভ্রমণ।
যা কিছু লিখিত নয়; সবকিছু নতুন সময়ে
কারও হাতে গ্রন্থিত হতে হয়, এটাই নিয়ম
চলে যাওয়া পাখিদের স্মৃতি থাকে মাটির বলয়ে
ঋতুগুলো সমাদরে খুঁজে ফিরে বিদেহী পরম,
সর্বনাম কিছু নেই, অব্যয়ের পদে ও প্রণয়ে
প্রেমের পরাগগুলো বিলিয়ে যায় হাওয়া ও আদম।