পণ্য
হাত পাতো তাড়াতাড়ি এই নাও মন
কাচ ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করেছ কখন
সাবধানে হাতে নিও মনভাঙা গুঁড়ো
না-ঘুমানো ঘুম থেকে আঠা নিয়ে জুড়ো
নয়তো তীক্ষ্ণ খোঁচা নোখের গোড়ায়
রক্তকণিকাগুলো কাফনে মোড়ায়
ভাঙা মন জোড়া দিয়ে রেখো বাঁধিয়ে
জানি না কী-ই বা হবে আর তা দিয়ে
তার চেয়ে ভাঙ্গারি হাটে বেচো মন
মনের ব্যাপারি করো মন বিপণন!
কুহকশহরের ঘোড়াগুলো
সব কিছু বেশ শুনশান হয়ে এসেছিল
ভাবলাম, যাক, এই পোড়া শহরের এতদিনে তবে একটু জিরোবার ফুরসৎ মিললো
এবার দুদণ্ড একটু হাঁপাক, বড় করে দম নিক
ডাইনে বাঁয়ে সামনে পেছনে তাকিয়ে দেখে নিক চারপাশে কেমন ভাঙাচোরা আবর্জনা।
এলোমেলো রাস্তাঘাট, পরিকল্পনাহীন বাড়িঘর
দোকানপাটে তার আদি মানচিত্রটাই গেছে বদলে।
নিজেকে একটু বুঝে টুঝে নিক।
কতদূর আর হাঁটতে পারবে খুঁড়িয়ে বা বিদ্যুতের টানাপড়েন ধাক্কাধাক্কিতে।
শুনশান আঙিনায় বসে নিজের দেহের জোড়াগুলো খুলে টুলে
আবার একটু জুড়ে নেওয়ার তালে ছিল শহর
হঠাৎ কোত্থেকে এক কুহকী ঘোড়া ছুটে এসে চিঁহিহি করে ছাল ওঠা প্রাচীন চাতালে দাঁড়ায়
তার ঘাড় থেকে চুঁয়ে পড়ছে সূর্যজলে মাত্রই অগ্নিস্নান সেরে আসা হিরক আরক
কুহকাশ্বের খুরগুলো পাথরশব্দে দাপাতে থাকে
লেজের চামর খেয়ে বাতাসের বাতরস বাষ্প হয়ে উড়ে যায়
মহা শোরগোল করে হ্রেষাধ্বনি তুলে
কেশর কাঁপিয়ে, ঝাঁপিয়ে দাপিয়ে লাফিয়ে, আশ্চর্য কুহকী ঘোড়া
ঝিমিয়ে পড়া বেতো শহরটাকে ঝাঁকুনি দিয়ে হঠাৎই বেরিয়ে যায়
মানুষজন হাঁ করে এই আজব অশ্বের শানেনযুল খুঁজতে থাকে।
তবে অশ্বপৃষ্ঠে আমাকে এক ঝলক দেখে ওরা বুঝতে পারে এসব ভেবে লাভ নেই।
কুহকী অশ্বেরা এরকমই হয়
ওরা আসে আর যাকে মনে ধরে তাকে হরণ করে নিয়ে।
লহমা চাবুক তুলে চলে যায় কুহকশহরে।
বিমূর্ত তানপুরা
একলা মেঘের নীল চিঠিটার খোঁজে
গাঙচিলেরা খুললো গোপন ডানা
জলপরীদের কোঁকড়া চুলের ফাঁদে
আটকে গেলো অদৃশ্য মাছরাঙা।
স্বয়ংবরা রাজ্যসভায় কবে
একটা ছিলো বিমূর্ত তানপুরা
মেঘলা মেয়ে জানলা ধরে একা
সখ্য করে নিবিড় এনভেলাপে।
মাস্তুলে মেঘ মাখছে রঙের ফোঁটা
ভুল ইজেলে প্রত্ন নারীর রেখা
মিল খুঁজো না একটু আমার সাথে
চন্দ্রপুরে অন্ধ মেয়ে কাঁদে।
নীল কাজলে চোখ ভরেছি বলে
ঝাপসা দেখি দিব্য আমার চিঠি।