চোখ ছোঁবো, কাজলও ছোঁবো
চোখ ছোঁবো আর কাজলও ছোঁবো
. নিকষ-কালোর খোঁজে;
প্রেম দেবো আর পরশও দেবো
. পিঁচুটি যে-জন বোঝে।
ঘুম-চাতুরি সবটা নেবো তার
. যে বয় ব্যথার ভার;
দেহের সমান গড়ে দেবো ঘর
. পুকুর সমান পাড়।
মাঝপুকুরে সাঁতার শেখা হলে
. ভাসাবো নতুন জলে;
পেঁপের মতোন ঝুলে থাকা কালে
. হাসবো গোপন ছলে।
যার দু চোখে আলোর খেলা দেখে
. রাতেরা গোসল শেখে;
তাকেই ছোঁয়ার তৃষ্ণা ঠোঁটে রেখে
. মন দেবো মনে মেখে।
ঘর ছোঁবো আর ছোঁবো ঘরোনিও
. কাজলের কালো পাবো;
মুখের আদল চন্দ্র গড়ে দেবো
. নেবো গালের টোলও।
প্রেমের পইছা যত্নে দেবো বেঁধে
. সাথে রাত্রি মোছা ঘোর;
যার আলোতে দুপুর যাবে কেঁদে
. তার হাতে দেবো ভোর।
বিপরীত চাঁদ
সমাবেশ ঘিরে কিছু পরিপাটি বৃষ্টি হোক, স্থির
জনতার পাঠ হোক জাগরণী, ডানাদের হাটে
ডাহুক-যতনে ডাক ফিরে যাক বিনয়ের মাঠে
করুণাকে ভুলে হোক গড়ে তোলা শপথের নীড়।
চিবুকের মেঘ থাকে পলাতকা ধোঁয়ার মতন
বৃষ্টির ঘূর্ণনে খোলে চোখ, আপেল রঙের ঘোরে
কেঁপে উঠে নজরানা চাহনিরা দোলে ভুল দ্বোরে
দাঁড়াবার ছাঁচে হোক দেহে-মনে কুলের যতন।
পাতার দোলায় গাছ ঘুম ভুলে জাগুক তুমুল
বেরসিক দৌড় ঘিরে সাধকের ঝড় হোক খুশি
চাবিহীন দরজার মায়া দিয়ে কাকে ঘরে পুষি!
পদচারণার ভুলে মিশে যাক কাঠে গড়া কূল।
বৃষ্টি হোক পাড়াজুড়ে সমস্বরে, বিপ্লবের ডাকে
বিপরীত চাঁদ থাকে, জোছনার জ্বালা থাকে বুকে।
বাউলের ভোর
চোখ গলে আসে ভোর
সোহাগের ছলে যারা চুলজুড়ে মেখেছে আঁতর
পথে তারা পায় দেখা আদি রূপ আলোর গতর।
মেঘের দেহের মতো
বাষ্পীয় ক্ষত নেই তাহাদের চোখের ভেতর;
পরশির চেনা কোন রাত নেই নীড় বরাবর।
আমূল তুলেছে ঝড়;
মানুষের ফেলে রাখা নিষ্ফল মাঝরাত যতো
হারিয়েছে নগরেরা, ভুলস্রোত আলাপের মতো।
বেহুলা বাউল নয়
তবু বাজে প্রেম জুড়ে ব্যথাভরা ভেলার নুপুর
রতির সুরেরা নাচে, সাজে একা লালন-দুপুর।
জেগেছে আলোর বোধ
হাসন রাজার সুর আজো ধরে হাওরের স্রোত
মন ছেঁকে তুলে আনে প্রণয়ের সব প্রতিরোধ।
প্রিয়ার দু’হাত ছুঁয়ে
. বাউলের ঠোঁট জানি কাঁপে বারোমাস;
ফুলের আদর বাড়ে
. বাগানের আয়ু নাড়ে সুনীল বাতাস।