বৃষ্টি পাখিদের জন্য নয়
মেঘ গুড়গুড় করছে, বৃষ্টিও হচ্ছে
গভীর এ রাতে শুধু আমি ও অন্ধকার জেগে আছি
এই রাতে পাখিরা ভিজে গেলে তারাও কি জেগে থাকে?
আমি জেগে থাকবো, তবু পাখি হবো না।
বৃষ্টি পাখিদের জন্য নয়, বৃষ্টি
রাত জাগা একাকী মানুষের জন্যও নয়।
মেঘ যত গুড়গুড় করছে,
আমি তত একা হয়ে যাচ্ছি
অন্ধকারও তত ঘন হয়ে যাচ্ছে
রাত নিশিথে একা একা বৃষ্টি এলে
একা থাকা মানুষ আর পাখিদের কষ্ট সমান হয়।
পাখি না ডাকলে মানুষের ঘুম আসে না
পাখি না ডাকলে মানুষের ঘুম ভাঙে না
পাখি না ডাকলে অন্ধকারেরও ঘুম ভাঙে না
মানুষের ঘুম না হলে বিরহী প্রেমিক হয়ে যায়
বিরহী প্রেমিকেরা জেগে থেকে স্বপ্ন দেখে না
আর অন্ধকার জেগে উঠলে সূর্য হয়ে ফুটে ওঠে
প্রেমিক না ঘুমালে প্রেমিকা দূরে চলে যায়
পাখি আর প্রেমিকারা বড় আদরের হয়
মেঘ গুড়গুড় করছে, রাত দীর্ঘ হচ্ছে–
একা ঘরে বৃষ্টি নামতে নেই।
নিরঞ্জনের উপচারে
ফুলেরা কি নগ্ন থাকে?
ভ্রমরের ডানা কেন খোঁজে সেই ফুল?
ফুলের মধুতে তারা কেনই বা আকুল?
যদি কোনো একদিন নগ্নতার অভিযোগে
ফুলেদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে
কলঙ্ক মেখে দেয়া হয়
যদি বিচারের রায়ে ফুলেদের পরিয়ে দেওয়া হয়
পোষাক বা হিজাব!
তবে কি সবুজভূম ফোটাবে কোনো ফুল?
তবে কি প্রেমিক-প্রেমিকা ফুল হাতে হবে কী আকুল?
ভ্রমরের গানগুলো তবে কি বিষেভরা ভুল!
তুমিও নিরঞ্জন দেখি, ফুলের উপচারে কত না ব্যাকুল
তবে কেন মগ্ন ভবে–নগ্ন নগ্ন করে এত হুলস্থুল!
সুরভে পেলবে ভাস্করে ভাস্বরে
শিল্পে ও শৈলীতে ফুটে থাকো ফুল–
ফুটে থাকো, ফুটে থাকো…ফুটে থাকো ফুল।
বোঁচাচাঁদ
বারো বছর পরে
বারোটা বছর পরে কবিতা অবকাশে গেলে
শূন্যতার খাঁ খাঁ ঘর ছেড়ে
দূর প্রেয়সীর কাছে ডানা মেললাম।
কাছে পেয়ে অবাক বিস্ময়ে খুঁটে খুঁটে দেখে
এতোদিনে জানলাম,
প্রেয়সীর নাক যেন বোঁচাচাঁদ এক
আর
অলকানন্দার মতো টোলপড়া গাল
মধুমতির বালুচরে গিলেছে আধেক।
তারপর কবিতার অবকাশ শেষে
কবিতায় উপমায় ফিরে আসে সে
উৎপ্রেক্ষায় বোঁচাচাঁদ দিলে ডাক
মধুমতি বারবার বানে যায় ভেসে।
বার বছর পরে–আজ
কবিতারা বদলে নিয়ে বাঁক–
ঘুরে ফিরে নিয়ে আনে সেই বোঁচাচাঁদ
আর
মধুমতির বালুচরে জেগে থাকা টোলের আস্বাদ।